ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ নির্বাচন ভবনের কার্যালয়ে রোববার (১১ জুন) বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৮৫ সাল থেকেই ইউএনডিপি আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে রয়েছে। তাদের সমন্বয়ের মাধ্যমে অন্য পার্টনারশিপও কাজ করেছে।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ১০ কোটি ১৮ লাখ ভোটারের তথ্য ভাণ্ডার রয়েছে। যেখান থেকে ৭৪টি সংগঠন সেবা নিচ্ছে। ইউএনডিপি স্বচ্ছ ব্যালট পেপার, অমোচনীয় কালিসহ প্রতিটি বিষয়ে সহযোগিতায় যুক্ত। একাদশ সংসদ নির্বাচনে রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ইউএনডিপির কাছে কি কি চাইতে পারি তা নিয়ে আজ (১১ জুন) একটি সভা ছিল। এজন্য আমরা ১০ ধরনের খাত চিহ্নিত করেছি। সামনের নির্বাচন বা সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে এসব সুবিধা নেওয়া হবে।
সচিব বলেন, দেশে বর্তমানে ৯ কোটি ভোটারকে স্মার্টকার্ড দেওয়ার প্রকল্প আইডিইএ বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তা চলমান। কিন্তু ভোটার ১০ কোটি ২০ লাখের মতো। ১ কোটি ২০ লাখের মতো ভোটারের কাছে কোনো ধরনেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তাদের জন্য ইউএনডিপির সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় বর্তমান আইডিয়া প্রকল্পটি আগামী ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবে। কাজেই আগামী পাঁচ বছর যে দুই-আড়াই কোটি ভোটার অন্তর্ভুক্ত হবে তাদেরও স্মার্টকার্ড ইউএনডিপির সহায়তায় করা যায় কি না, সে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এছাড়া ভোটার এডুকেশন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, মার্টিং পেন অটো সিল করা যায় কিনা, যাতে কোনো কালি লাগবে না, ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণও করা যাবে- সেটা চিন্তা-ভাবনা চলছে। বর্তমানে রাবারের সিল ব্যবহার করা হয়, যা প্রতি নির্বাচনের আগেই কিনতে হয়। আবার ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নিয়েও সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
ভোটদানের গোপনকক্ষের জন্যও আমরা প্রতিবার টাকা দেই। এটা ছালা, চট বা বোর্ড দিয়ে তৈরি করা হয়। এবার চাচ্ছি এটা স্মার্ট করা যায় কিনা। এছাড়া অমোচনীয় কালির ক্ষেত্রেও স্মার্ট কালি ব্যবহার করা হবে। বলেন এই কর্মকর্তা।
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, আগামী ২৭ থেকে ৩০ জুলাই একটা সিম্পোজিয়ামে ইউএনডিপি ও ডোনার এজেন্সির সামনে একাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ উপস্থাপিত হবে। সেখানে কী ধরনের সহযোগিতা চাই তা চূড়ান্ত হবে।
এদিকে শুধু নির্বাচনের আগে নয়, নির্বাচনের পরের কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এক্ষেত্রে নির্বাচনী মামলা কীভাবে দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায় ও সারা বিশ্বে নির্বাচনে যে স্মার্ট বিষয়গুলো রয়েছে, তা বাস্তবায়নে সহায়তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো শর্তসাপেক্ষে সহায়তা নেওয়া হবে না। সিম্পোজিয়ামের আগে আগামী ২০ জুন ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধির সঙ্গে আরেকটি সভা রয়েছে। ইউএনডিপি সিম্পোজিয়ামে উন্নয়ন সহযোগী ও স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে বসতে বলেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। কেউ যদি সাক্ষাৎ করতে আসে ইসি তো দূরে থাকতে পারবে না। কিন্তু কতটুকু কাজ করবে দেখার বিষয়। আমাদের সবকিছুই ওপেন। বর্তমান ইসির অধীনে ৩১০টি নির্বাচন হয়েছে। আমার ধারণা কেউ কোনো নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেনি।
ইউএনডিপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলটি ইসির সঙ্গে রোববার (১১ জুন) দুপুরে বৈঠক করে। এতে কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, ডেপুটি ডিরেক্টর মিস কিওকো ইউকোসুকো ও অ্যাডভাইজর ডেমোক্রেটিক গভার্নেন্স মিস শিলা তাসনিম হক উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
ইইউডি/এএ