ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কোরবানির হাটে জনস্রোত, দম ফেলার ফুরসত নেই

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৭
কোরবানির হাটে জনস্রোত, দম ফেলার ফুরসত নেই কোরবানির হাটে জনস্রোত, দম ফেলার ফুরসত নেই

রাজশাহী: শুক্রবার রাত পোহালেই ঈদ-উল-আজহা। তাই রাজশাহীর কোরবানির পশুর হাটে এখন জনস্রোত নেমেছে। পশু কেনা-বেচায় রাজ্যের ব্যস্ততা ভর করেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাথায়। 

যেন দম ফেলার ফুরসত নেই কারোরই। শেষ মুহূর্তের কেনা-বেচায় রাজশাহীর সিটি হাটে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

পশুর আমদানি ও ক্রেতা দুইই বেড়েছে। তাই শেষ দিনে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখে।

রাজশাহীর সবচেয়ে বড় এবং শহরের একদম কাছে হওয়ায় সিটি হাটেই আজ ছুঁটছেন ক্রেতারা। তাই সকাল থেকেই কেনাকাটায় সরগরম হয়ে উঠেছে এই পশু হাট। গরু আর খাসির আমদানিও হয়েছে প্রচুর।  

পিছিয়ে নেই মহানগরীর উপকণ্ঠে থাকা কাটাখালির মাসকাটা দীঘি, জেলার গেদাগাড়ীর মহিষালবাড়ি, পুঠিয়ার বানেশ্বর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনাইচণ্ডী ও নওগাঁর চৌবাড়িয়া পশু হাটও।

তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আজ কমতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর দাম। এতদিন ধরে রাখলেও আজ দাম কমাতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। নিজের পশুটি অল্প লাভেই ছেড়ে দিচ্ছেন এখন। তাই জায়গা না থাকায় এতদিন যারা কোরবানির পশু কেনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারাই জিতছেন আজ।

ফলে রাজশাহীর বৃহত্তম কোরবানির পশুর হাট ‘সিটি হাট’ এখন কানায় কানায় পূর্ণ। ক্রেতা-বিক্রেতার দর কষাকষিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে হাটের প্রতিটি প্রান্তই। উভয় পক্ষই চেষ্টা করছেন, কিভাবে আরও কম দামে গরু-খাসি পাওয়া যায়, আর দাম কম হলেও তা বিক্রি করে কিভাবে তড়িঘড়ি বাড়ি ফেরা যায়।  

যানজটে পথে দীর্ঘসময় ব্যয় হওয়ায় আজ হাটগুলোতে তেমন দেখা মেলেনি বাইরের ক্রেতাদের। আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে স্থানীয় ক্রেতা। এবার ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দেশি ছোট এবং মাঝারি আকৃতির গরু। ক্ষতিকর বিভিন্ন দিক ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে মোটা তাজাকরণ গরু এবং ভারতীয় গরুর দিক থেকে সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তাই দেশি গরুর কদরই বেশি।

সকাল থেকেই চলছে বেচাকেনা। বেলা ১১টা বাজতে না বাজতেই জমে উঠেছে হাট। জুম্মার নামাজের পর ভীড় আরও বাড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা। বিকেলে মুখরিত হয়ে উঠবে হাট ও তার আশেপাশের এলাকা। সন্ধ্যা গড়িয়ে আজ এ বেচাকেনা চলবে গোটা চাঁদরাতই। ভোরে ফিরবেন অনেক বিক্রেতা।

রাজশাহীর পবার পারিলা থেকে ৮টি গরু নিয়ে এসেছেন জয়নাল শেখ। তার সবচেয়ে বড় গরুটির দাম ৯০ হাজার টাকা। আর সবচেয়ে ছোট গরুরটির দাম ৪৫ হাজার টাকা। মাঝারি আকারের বাকি গরুর দাম হাঁকছেন ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। সকাল থেকে দু’টি মাঝারি গরু বিক্রি করেছেন। তবে হাটে বড় গরুর চেয়ে মাঝারি আকারের গরুই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী।

শেষ সময়ের বেচা-কেনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের গরুর খামার আছে। সারা বছর গরু পালনের পর হাটে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু যতটা লাভ আসা করেছিলেন, শেষ পর্যন্ত ততটা লাভ হচ্ছে না। হাটে ভারতীয় গরুর আমদানি বাড়ায় স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীরা ভালো দাম পাচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।

ক্রেতা-বিক্রেতা ও হাট কমিটির লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে গত ৩/৪ দিন থেকে হাট জমে উঠলেও আজই লোক বেশি এবং অন্যান্য দিনের তুলানায় দামও একটু কম। ভোর থেকেই রাজশাহীর আশেপাশের উপজেলা থেকে গরু-খাসি হাটে আসতে শুরু করেছে।  

রাজশাহী সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, এবার ভারতীয় গরুর আমদানি গত বছরের চেয়ে বেশি। এর পরও দেশি গরুরই চাহিদা বেশি। তবে বিক্রেতারা প্রথম দিকে চড়া দাম হাঁকলেও আজ দাম ছেড়ে দিয়েছেন। কাল ঈদ। তাই শেষ দিনে অল্প লাভেও অনেকে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন।  

এতে যেসব ক্রেতারা দাম কমার অপেক্ষা করছিলেন এবং যারা বাড়িতে জায়গার অভাবে কোরবানির পশু কিনতে পারছিলেন না তারা লাভে রয়েছেন। উচ্চবিত্তদের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত ও সাধারণ ক্রেতারাও দর-দাম করে সাধ ও সাধ্যের মধ্যেই সিটি হাট থেকে পছন্দের পশুটি কিনে বাড়ি ফিরছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৭
এসএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।