রাজশাহীতে গত বছর থেকে নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এতে সারা মিলছেনা নগরবাসীর।
তবে এখনও সেভাবে জনসচেতনতা গড়ে না ওঠায় এমনটা হয়েছে বলে দাবি করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) কর্তৃপক্ষে। তাদের দাবি নগরীর অন্তত ৩০ শতাংশ পশু নির্দিষ্ট স্থানে জবাই করেছে। আগামীতে জনগণের আগ্রহ বাড়ানোর সকল ব্যবস্থাই করবেন তারা।
শনিবার (০২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, কিছু মানুষ নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি দিলেও অন্যরা যার যার ব্যবস্থাপনায় বাড়িতে অথবা খোলা রাস্তার ওপরই পশু কোরবানি দিয়েছেন।
তবে জনগণ আগের চেয়ে কিছুটা সচেতন হওয়ার কারণে পশু কোরবানির বর্জ্য যেখাসে সেখানে পড়ে থাকতে দেখা যায়নি। আর নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই না করলেও সিটি করপোরেশনের সরবরাহ করা সবুজ ব্যাগে কোরবানির বর্জ্য জমা করছেন। বিকেলের দিকে এগুলো নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।
নগরীর বেলদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ওসমান ফারুক বাংলানিউজাকে বলেন, শুক্রবার (০১ সেপ্টেম্বর) জুম্মার নামাজের পর মসজিদে ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তার বাড়ি থেকে কোরবানির স্থান অনেক দূর। সেখানে পশু জাবাই করে মাংস নিয়ে আসা অনেক কষ্টকর।
এছাড়া সময়মতো পশু কোরবানি করার জন্য ইমাম পাওয়া যায়া না। ভাড়া করা লোকজনও সেখানে যেতে চায়না। এমন বিভিন্ন কারণে তিনি ও তার মতো অনেকেই নির্দিষ্ট স্থানে পশু জাবাই করতে যাননি।
এদিকে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ মামুন ডলার বাংলানিউজকে বলেন, এটা আসলে উৎসাহ বা সচেতনতার ব্যাপার। মানুষ সচেতন হলেও তাদের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি করার বিষয়ে উৎসাহ কম। এজন্য আরও ৪-৫ বছর সময় লাগবে। সবাই যখন এর ভালো দিকগুলো সম্পর্কে বুঝতে পারবেন তখন আর কেউ খোলা রাস্তার ওপর কোরবানি করবেন না, নির্দিষ্ট স্থনেই যাবেন।
এরপরও নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডেই স্ব-স্ব কাউন্সিলরের নেতৃত্বে সকাল থেকে কোরবানির পশু জাবাই করা হয়েছে। অন্তত ৩০ শতাংশ পশু নির্দিষ্ট স্থানে জাবই করতে পেরেছেন। এ জন্য প্রতিটি স্পটে ১০ কেজি ব্লিচিং পাউডার, বর্জ্য অপসারণে সবুজ পলিব্যাগ ও মাংস পরিবহনের জন্য ব্যাগ সরবারহ করা হয়েছে। তারা যথা সম্ভব চেষ্টা করেছেন। তবে নগরবাসীর শতভাগ আশা পূরণ করাটাই খুবই চ্যালেঞ্জ।
প্রচার প্রচারণার কোনো অভাব ছিলো না। তবে মানুষ বাড়ির কাছ থেকে দূরে গিয়ে পশু কোরবানি না করার কারণে এমনটা হয়েছে বলে তিনি জানান রাসিকের এই প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা।
এর আগে কোরবানির পশু জাবাই করার জন্যে সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে ২১০টি স্থান নির্ধারণ করা হয়। সেখানে কোরবানির জন্যে এবারও নগরবাসীকে ইমামসহ অন্যান্য সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়। বর্জ্য অপসারণের জন্যে পরিচ্ছন্ন বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বর্জ্য অপসারণে ঈদের দিন প্রায় ৫শ' কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে কাজ করছেন।
নগরবাসীর সব ধরনের সহযোগিতার জন্যে সিটি করপোরেশনের কন্ট্রোল রুম ঈদের দিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকছে।
যে কোনো ধরনের অভিযোগ ও সহযোগিতার বিষয়ে ০১৯৭৯-০৯৮৮৯৮, ০১৭১৩-০৯৮৯৫৬ ও ০১৭১৬৪০৮০৭১ নম্বরে যোগাযোগ করতে সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছেন সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৭
এসএস/জিপি