ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাড়তি টাকা দিলেই মিলছে ফিরতি টিকিট! 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৭
বাড়তি টাকা দিলেই মিলছে ফিরতি টিকিট!  ঈদ শেষে বাসের ছাদে করে ঢাকায় ফিরছেন কর্মমুখী মানুষ- ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: ‘কাউন্টারের ভেতরে গেলে সাফ বলে দেওয়া হচ্ছে টিকিট নেই। কিন্তু বাইরে আসতে হাঁক-ডাক শুরু। আসেন ঢাকা গেলে আসেন। কাছে যেতেই ধরিয়ে দেওয়া হলো টিকিট। কেবল ২শ’ টাকা বেশি লাগলো। কিন্তু কী আর করা, ছুটি শেষ ফিরতেই হবে। তাই বাড়তি টাকা দিয়ে টিকিট নিলাম’।

রাজশাহীর শিরোইলে হানিফ কাউন্টার থেকে বেরিয়ে সোমবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এমনটিই জানান সুলতানাবাদ এলাকার ফায়সাল আলম।  

তিনি বলেন, ঢাকার ফেরত টিকিট কাটতে গিয়ে আজ ঘাম ঝড়েছে ।

অবশেষে টিকিট পেয়েছেন। তবে নির্ধারিত ৫শ’ টাকার টিকিটের জন্য তাকে সাড়ে ৭শ’ টাকা বেশি গুণতে হয়েছে। দুটি টিকিট নিয়েছেন ১৪শ’ টাকায়।
 
তবে কেবল ফায়সাল আলমই নন ঈদ শেষে ঢাকার কর্মস্থলমুখী মানুষগুলোর এখন একই হাল। ফিরতি টিকিট না পেয়ে নানান দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে রাজধানী ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। যারা বেশি দাম দিয়েও টিকিট নামের সোনার হরিণ পাচ্ছেন না তারা নগদ টাকা দিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ছাদে উঠছেন।        

শিরোইল ঢাকা বাস টার্মিনালে গার্মেন্টস কর্মী সবুর মিয়া বলেন, আজ রাতের মধ্যে যে কেনো মূল্যে তাকে ঢাকায় ফিরতেই হবে। কাল গার্মেন্টসে না গেলে বেতন কাটা যাবে। কিন্তু বাস কাউন্টারে টিকিট কেনার উপায় নেই। কারণ আগেই বলা হচ্ছে আজ থেকে আরও এক সপ্তাহের কোনো ফিরতি টিকিট নেই।  
ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরতে বাসের ছাদে উঠছেন এক নারী- ছবি: বাংলানিউজ তাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাসের ছাদে চেপে বসেছেন। এজন্য তাকে টিকিট কাটতে হয়নি। তবে বাসের হেলপারকে নগদ ৪শ’ টাকা করে দিতে হয়েছে। রোদ-বৃষ্টি যাই হোক তা মেনে নিতেই হবে।  

এ সময় আবুল হোসেন নামের রাজধানীগামী এক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে টিকিট থাকলেও বাড়তি টাকা আদায়ের জন্য বলা হচ্ছে টিকিট নেই! কর্মস্থলমুখী মানুষদের জিম্মি করে বাইরে অনেকটা প্রকাশ্যেই ৪শ’ ৮০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকা পর্যন্ত। আর ১৩শ’ টাকার এসি টিকিট কারও কারও কাছে ক্ষেত্র বিশেষ ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।

বর্তমানে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল ও দেশ ট্রাভলস, গ্রামীণ, শ্যামলী, তুহিন পরিবহনসহ বিভিন্ন নামীদামী কোম্পানির বাস কাউন্টারের একই অবস্থা। ভেতরে দাঁড়িয়ে, ইঞ্জিন কাভারে বসে বা ছাদে চড়ে ঢাকা যাওয়া যাচ্ছে কেয়া, মর্ডান, ইসলাম ট্রাভেলস, রাব্বানিসহ অন্য পরিবহনে।  

তবে হানিফ কাউন্টারের সহকারী ম্যানেজার বাবুল হোসেন বাড়তি টাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঈদের ছুটি শেষে পরের সাত দিনের টিকিট ঈদের আগেই বিক্রি হয়ে যায়।  

অনেকে স্বজনদের মাধ্যমে ঈদের ফিরতি টিকিট কেটে নিয়েছিলেন। যারা আগে এসেছেন, তারাও রাজশাহী নেমে ফিরতি টিকিট নিয়েছেন। ফলে এখন টিকিট শূন্য। তবে কারও যাত্রা বাতিল হলে সেই টিকিট মিলতে পারে। তাই ফিরতি টিকিট নেওয়া যাত্রীরাই এখন স্বস্তিতে ফিরছেন বলে জানান বাবুল।
  
বাংলাদেশ সময়: ১২০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৭
এসএস/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।