যে পটল রাজশাহীর বাজারে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি সেটি পারিলায় কেনা হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ পাইকারি ১৬শ' থেকে ১৮শ' টাকা মণের পটল সরাসরি ক্ষেত থেকে ১২শ' টাকা মণ দরে কেনা হচ্ছে।
তবে লাভের এই অঙ্ক কি কৃষকের ঘরে যাচ্ছে? না যাচ্ছে না। কারণ তিন রাস্তার মাথায় যিনি পটল কিনছেন তিনি একজন মধ্যস্বত্বভোগী। তৃণমূল কৃষকরা কেবল পরিবহনের ঝামেলা এড়াতে এই পটল ক্ষেত থেকে তুলে তার কাছে সস্তা দরে বিক্রি করছেন। আর আবদুল হালিম নামের ওই মধ্যস্বত্বভোগী কৃষকদের পটল কিনে জড়ো করে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছেন। দেখা গেলো কৃষক ফসল ফলাচ্ছেন ঠিকই তবে লাভ করছেন সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীরা।
কেবল পটলই নয়, গ্রামের পেঁপে, করলা, কাঁকরোল, কাঁচামরিচ, বরবটির চাষিদেরও একই অবস্থা। আবদুল হালিমের মতো কিছু পুঁজিবাদী চক্র গ্রামে-গঞ্জে ঢুকে জমিদারি আমলের খাজনা তোলার মতো করে পানির দরে কৃষকের রক্ত-ঘাম ঝরানো ফসল কিনছেন। আর শাসন করছেন শহরের সাধারণ ক্রেতাদের।
ওই গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা জানান, পটলের যে, দাম তা বিক্রি করে এখন চারা, সার, কীটনাশক আর সেচের খরচই উঠছে না। লাভের বাড়ি তো আরও দূর। ঈদের আগের মাসে পবার পারিলা হাটে পটলের দাম নেমে এসেছিল ৬/৭ টাকা কেজিতে। গ্রামের অনেক কৃষক পটল তুলে গোয়ালের গরুকে খাইয়েছে। তবে ঈদের আগের সপ্তাহ থেকে আবারও পটলের দাম বেড়েছে। তাই যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়েই খরচ ওঠানোর চেষ্টা করছেন।
এর ওপর হাটে নিয়ে গেলে খাজনা ও পরিবহন খরচ লাগবে। তাই তার মতো অনেকেই সরাসরি ক্ষেত থেকে পটল তুলে মহাজন শ্রেণির ব্যবসায়ীদের কাছে কষ্টার্জিত ফসল অল্প দামে তুলে দিচ্ছেন।
আবদুল হালিম নামের ওই মধ্যস্বত্বভোগী জানান, সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার হচ্ছে হাটবার। এই দুদিন পারিলায় হাট বসে। মূলত তিনি এই দুদিনই কৃষকদের ফসল কেনেন। যখন যা পান তাই কেনেন। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) পটল পেয়েছেন। বেলা ১০টা পর্যন্ত ২০ মণ পটল কিনেছেন।
এখনও কিনে কিনে জড়ো করছেন। বিকেলে তার কাভার্ডভ্যান এসে এগুলো তুলে নিয়ে যাবে। পরে কিছু রাজশাহীর মাস্টারপাড়ার আড়তে দেবেন। আর কিছু ঢাকার কারওয়ান বাজারে পাঠাবেন। সেখানে এর চেয়ে কিছু বেশি দামে বিক্রি করবেন। এটাই তার লাভ। হাটের দিন গ্রামের কৃষক ক্ষেতে বসেই ফসল বিক্রি করতে পারেন। এতে পরিবহন খরচ বাঁচে। তারও কিছু বাড়তি লাভ আসে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৫, ২০১৭
এসএস/আরআর