ঢাকা, সোমবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালে ৩ ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৭
বরিশালে ৩ ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ বরিশালে ৩ ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ, ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশালের কাশিপুর নব আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেরানী কর্তৃক নবম শ্রেণীর তিন ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে।

আহত তিন ছাত্র রিফাত (১৪), ইমরান হোসেন (১৪) ও মোঃ শাকিলকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বুধবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর বৃহস্পতিবার সকালে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও আহত ছাত্রদের সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের নব আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি চৌধুরী নবম শ্রেণীর ওই তিন ছাত্রকে স্কুলের লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। এসময় তার সঙ্গে মারধরে যোগ দেন স্কুলের কেরানী মোঃ রাজ্জাক।

মারধরে এই তিন ছাত্র আহত হয়। খবর পেয়ে অভিভাবকরা ছুটে এসে আহত ছাত্রদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আহত তিন ছাত্র হচ্ছে কাশিপুর ইউনিয়নের কলসগ্রামের বাসিন্দা মো.সিরাজুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে রিফাত হাওলাদার, মো.আঃ বারেক হাওলাদারের ছেলে ইমরান হোসেন এবং একই এলাকার শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে মো. শাকিল হাওলাদার।

জানা যায়, ওই দিন মারধরের শিকার হয়েছে শওকত ও নাঈম নামের আরো দুই ছাত্র। তবে তাদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ করা হয়নি।

এ ঘটনায় বুধবার তিনছাত্রের একজন রিফাতের বাবা মোঃ সিরাজুল ইসলাম হাওলাদার এয়ারপোর্ট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে এবং প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।

অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে এয়ারপোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) এ আর মুকুল জানান, একজন অভিভাবক সাধারণ ডায়েরি করার পর পুলিশ এ ব্যাপারে তদন্তে নেমেছে। মারধরের পেছনের আসল কারণ খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা আজ (বৃহস্পতিবার) মানববন্ধন করেছেন তারা পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নেননি। বিষয়টি নিয়ে কোনো মহল অপতৎপরতায় জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে।

এবিষয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি চৌধুরী জানান, দীর্ঘ ৪৮ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তিনি ছাত্রদের সন্তান হিসেবে দেখে আসছেন। এই তিনজনের গায়ে হাত তুলতে হবে সেটা তিনি নিজেও ভাবেননি।

তিনি দাবি করেন, বেশ কিছুদিন ধরে ওই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে তিনি নানা অভিযোগ পেয়ে আসছিলেন। বারবার  সতর্ক করা হলেও তা কোনো কাজে না আসছিল না। তাই তিনি বাধ্য হয়ে এই তিনজনকে মারধর করেছেন। এদের মধ্যে রিফাতের নামে এতো বেশি অভিযোগ জমা হচ্ছিল যে, রিফাতের অভিভাবকদের বললে তারা তাকে বেদম মারধর করতেন। তাই তাদের বলতে পারেননি। তিনি নিজেই তাকে ও তার সহযোগীদের দুষ্কর্মের শাস্তি দিয়েছেন।

‘কিন্তু এখন পরিস্থিতি উল্টে গেছে। নানান অভিযোগ উঠছে আমরা বিরুদ্ধে। অনেকেই নিশ্চুপ ও সুবিধাবাদী ভূমিকায় চলে গেছেন। আমি মিথ্যে কখনো বলিনি, বলতেও চাই না। আর কেরানী রাজ্জাক এ ঘটনার সময় আমার সাথে ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও মিথ্যে’—বাংলানিউজকে এভাবেই নিজের অবস্থান জানান প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি চৌধুরী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মারখাওয়া শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন স্কুলছাত্র মিলে জোট বেঁধে ঘোরাফেরা করে। ইভটিজিংসহ তাদের নানান অপরাধের বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্রমাগত নালিশ আসতো। ক’দিন আগে এক স্কুলছাত্রকে মারধরও করেছে তারা।

এদিকে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকের নাম লেখা নিয়েও স্থানীয়ভাবে রয়েছে বিরোধ। তাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত চেয়েছেন স্থানীয়রা।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৭
এমএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।