যা শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চলে। আর স্নানের আগ মুহূর্তে অনেকে চুল ন্যাড়া করাসহ প্রায়শ্চিত্ত ও পিণ্ডদান করেন।
এদিকে এই উৎসবকে ঘিরে দু’দিন আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুয়াকাটায় আসতে শুরু করেন পূণ্যার্থীরা। শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
সারারাত ধরে চলে পূজা-অর্চনা, কীর্তন, ভগবতপাঠসহ ধর্মীয় কার্যক্রম। কুয়াকাটা রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রম চত্বরে শুক্রবার রাতে রাসপূজা ও উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ড. মো. মাছুমুর রহমান।
পূণ্যার্থীরা জানান, সাগর কন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আগত পূণ্যার্থী-ভক্তরা রাস পুর্ণিমা তিথিতে নাম সংকীর্তন, পূজার্চনা, পদাবলী কীর্তন শেষে ঊষালগ্নে পূণ্যস্নান করেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস সমুদ্র স্নানের মাধ্যমে জাগতিক পাপ মোচন হয় আর পূর্ণ হয় মনের বাসনা। তাই প্রতিবছর রাস উৎসবে অংশ নিয়ে সমুদ্র স্নান করে এ উৎসব পালন করে থাকেন তারা।
অপরদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সৈকতে অস্থায়ী মেলা বসেছে। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ, র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়।
উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বাংলানিউজকে জানান, সফলভাবে অনুষ্ঠান পর্যায়ক্রমে এগিয়ে চলছে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শনিবার ভোরে সমুদ্রে পুণ্যস্নান শেষ করেছেন।
‘সকাল থেকে কুয়াকাটায় এবং কলাপাড়া পৌর শহরের মদনমোহন সেবাশ্রমে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ রাসপূজা ও উৎসব শুরু হয়েছে। ’
তিনি বলেন, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পূণ্যার্থী-দর্শনার্থীরা রাস উৎসবে মিলিত হয়েছেন। কলাপাড়া সেবাশ্রম চত্বরে শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত পাঁচদিন চলবে রাস উৎসব ও মেলা। একই সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতেও চলবে এ উৎসব।
মদন মোহন সেবাশ্রমের পুরহিত পরিমল চন্দ্র দাস জানান, প্রতিবছর কুয়াকাটায় স্নান শেষে কলাপাড়ার মদন মোহন সেবাশ্রম আঙ্গিনায় রাস মেলা চলে আসছে। এবারেও তার কমতি ঘটেনি।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম বাংলানিউজকে জানান, বিভিন্ন স্থানে পুলিশের নজরদারি অব্যাহত ছিল। এখনও কোথায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খরব পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান জানান, রাস উৎসব কেবল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একক অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ থাকেনি। এটি এখন একটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। তবে আগত পূণ্যার্থী, দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া পুরো সৈকত সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে কুয়াকাটা হোটেল মোটেল মালিকরা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে এ বছর রাসমেলা ও স্নান উৎসবে আবাসিক হোটেলগুলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
এমএস/এমএ