অন্যদিকে সাতদিনের রিমান্ডের আবেদনের শুনানি শেষে আরজিনার পরকীয়া প্রেমিক শাহিন মল্লিকের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) সকালে ময়নারবাগের ৩০৬/পাঠানভিলার ৩ তলার ছাদের ভাড়া বাসা থেকে জামিল (৩৮) ও মেয়ে নুসরাতের (৯) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
শনিবার (০৪ নভেম্বর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাড্ডা থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. শাখাওয়াত হোসেন গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে হাজির করে আরজিনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ ও আসামি শাহিন মল্লিকের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালত ১৬৪ ধারায় আরজিনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে একই আদালত পুলিশের রিমান্ডের আবেদনের শুনানি শেষে চারদিনের শাহিন মল্লিকের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিকালে আসামি শাহিনের কোনো আইনজীবী না থাকায় তার কিছু বলার আছে কি-না- তা জানতে চান আদালত।
এ সময় শাহিন আদালতকে বলেন, ‘আরজিনা ও আমি পাশাপাশি থাকায় কারণে দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রথমে আরজিনা আমাকে প্রপোজ করেন। এক পর্যায়ে আরজিনা বাসা থেকে চলে আসেন। দু’মাস পর আবার জামিলের সংসারে ফিরে যান। আরজিনার পরিবার আমার আর আরজিনার সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি’।
‘এ কারণে আরজিনা আমাকে বলেন, সংসার করতে চাইলে আগে জামিলকে খুন করতে হবে। পরিকল্পনা অনুসারে আমি আমার এক বান্ধবীকে দিয়ে একটি ফার্মেসি থেকে ঘুমের ওষুধ এনে আরজিনাকে দেই। আরজিনা সেই ঘুমের ওষুধ করল্লা ভাজির সঙ্গে মিশিয়ে জামিলকে খাওয়ান। জামিল ঘুমিয়ে পড়লে আমি তাকে কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করি। জামিলকে মারার দৃশ্য নুসরাত দেখে ফেলায় তাকেও বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলি’।
শাহিন বলেন, ‘আমি তাদেরকে মারতে চাইনি। হঠাৎ অ্যাক্সিডেন্ট হয়ে গেছে। জীবনে প্রথম এমন কাজ করেছি। আর কখনো জীবনে এমন কাজ করবো না’।
অন্যদিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরজিনাও পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করতে পরিকল্পিতভাবে স্বামী ও সন্তানকে হত্যা করিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার দিন বিকেলেই নিহত জামিল শেখের ভাই মো. শামীম শেখ বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় হত্যা মামলাটি করেন। মামলায় নিহত জামিলের স্ত্রী আরজিনা বেগম ও সাবলেটের ভাড়াটিয়া আরজিনার পরকীয়া প্রেমিক শাহিন মল্লিককে আসামি করা হয়।
মামলার পর আরজিনাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে খুলনার খুলনার লবণচড়া এলাকার ভাইয়ের বাসা থেকে শাহিন মল্লিককে গ্রেফতার করে বাড্ডা থানা পুলিশ।
শাহিনের বাড়ি খুলনার দাকোপ উপজেলার কালাবনি-ছুতারখালি গ্রামে। তার বাবার নাম নাজিমউদ্দিন মল্লিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৭
এমআই/এএসআর