ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এবার এসিল্যান্ডের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে 'ভূমি বীজতলা' 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৭
এবার এসিল্যান্ডের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে 'ভূমি বীজতলা'  এসিল্যান্ডের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে 'ভূমি বীজতলা' 

যশোর: খোলা আকাশের নিচে রাখা আছে গাছসদৃশ্য ছয়টি বসার জায়গা। সামনের দেয়ালে একটি হোয়াইটবোর্ড। তার ঠিক পাশেই একটি কলিংবেল। ছয়জন একত্র হয়ে বেল বাজালেই চলে আসবেন একজন ভূমি কর্মকর্তা, শেখাবেন ভূমি সংক্রান্ত প্রাথমিক শিক্ষা।

প্রচলিত প্রথার উল্টোরথের এ চিত্র যশোরের অভয়নগর ভূমি অফিসে। অভয়নগরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মনদীপ ঘরাইয়ের উদ্ভাবন ও উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে ভূমি বিষয়ক জ্ঞানের পাঠশালা ‘বীজতলা’।

সেবাপ্রত্যাশী সাধারণ মানুষ ও তরুণ প্রজন্মকে ভূমির প্রাথমিক ধারণা দিতে এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম মাহামুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অধিকাংশ মানুষের ভূমি বিষয়ক জ্ঞানের ঘাটতি রয়েছে। মনদীপের এ উদ্যোগ সে ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

ভূমি পাঠশালার শিক্ষার্থী পার্থ প্রতীম সুর বলেন, দেশের অধিকাংশ শিক্ষিত মানুষও ভূমি সংক্রান্ত নিয়ম-কানুনে একেবারেই অজ্ঞ, এজন্য নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। তবে অভয়নগরবাসী এ উদ্যোগে অনেকে উপকৃত হবে। আমাদের ভূমি অফিসে অনেক উদ্ভাবনের মধ্যে এটাই আমার কাছে সেরা- যোগ করেন তিনি।

এ উদ্যোগের বিষয়ে উদ্ভাবক মনদীপ ঘরাই বাংলানিউজকে বলেন, আমার কাছে আসা অধিকাংশ সেবাগ্রহীতাদের ভূমি নিয়ে যথেষ্ট অস্পষ্টতা দেখেছি এ কয় মাসে। তাছাড়া, তরুণরা তো ভূমির বিষয়টাকে রীতিমত ভয়ই পায়। এ অভিজ্ঞতা থেকেই উদ্যোগটা নেয়া। শুধু আমি নয়, ভূমি অফিসের প্রতিটি স্টাফই বীজতলায় পাঠদান করাবে। আর, মানুষ ভূমির বিষয়ে সচেতন হলে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে বলেই আমার বিশ্বাস। ‘বীজতলা’ তে  ক্লাসগুলোর সময়কাল রাখা হয়েছে দশ মিনিট, যাতে তা অফিসের নিয়মিত কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত না করে। অফিসের কর্মদিবসগুলোতেই শুধু এ সেবা নিতে পারবে ভূমিজ্ঞান প্রত্যাশীরা।

এর আগে এসিল্যান্ড মনদীপ ঘরাই ভূমি হটলাইন নম্বর চালু, অফিসের সামনে বড় হরফে লেখা, আমি ও আমার অফিস ঘুষমুক্ত ব্যানার টানিয়ে ভূমি অফিসকে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক থিমপার্ক স্বাধীনতা অঙ্গন গড়ে তোলা, বজ্রপাত প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে অভয়নগরে চার লক্ষাধিক তাল বীজ রোপন, মাদকবিরোধী খেলা এবং বন্যা এলাকার পানি নিষ্কাসনে হাজারো এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে  নিজেই খালে নেমে কচুরিপানা তুলে গোটা অভয়নগরের জনগণের আপনজনে পরিণত হয়েছেন। অভয়নগরের ৮ মাসের কর্মকালে তিনি মানুষকে বিশ্বাস করাতে সক্ষম হয়েছেন, ভূমি অফিসে ঘুষ ছাড়া সব কাজই সম্ভব এবং জনগণ সচেতন থাকলে কোনভাবেই ঘুষ বাণিজ্য সম্ভব না।  

বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৭
ইউজি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।