রোববার (৫ নভেম্বর) সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের (সিপিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারির ভাইস প্যাটার্ন শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাময়িকভাবে আমরা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করে দেওয়া শুধু এ অঞ্চলে নয়, এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করেছে। সম্প্রতি মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনমূলক আচরণের কারণে সেখান থেকে ৬ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি অধিবাসী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ১৯৭৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথ ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ এরইমধ্যে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। আমাদের প্রত্যাশা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের প্রথম ও প্রধান নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্র ও সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করা এবং এসব রীতি-নীতি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা তৈরি করা।
বঙ্গবন্ধু কন্যা তার বক্তৃতায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের কাজে বঙ্গবন্ধু নিমগ্ন ছিলেন, ঠিক তখনই পরাজিত শক্তির দোসররা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। শুরু হয় সামরিক স্বৈরশাসনের যুগ। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমার দলের হাজার-হাজার নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও সংগ্রাম থেকে বিচ্যুত হইনি।
একমাত্র গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাই মৌলিক অধিকারসমূহ ভালোভাবে পূরণ করে উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে পারে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি সিপিএ প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য নিরসনের সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ মোকাবেলার নতুন সংগ্রাম। কিছু মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের ফলে নিরীহ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। জঙ্গিবাদ আজ বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করতে হবে।
বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের (সিপিসি) উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
জমজমাট অনুষ্ঠানের পর চলছে সিপিএ সম্মেলন
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৭/আপডেট ১৪২০ ঘণ্টা
এসকে/এসএম/এইচএ/