ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অভিযানে বেড়েছে জেল-জরিমানা, বেড়েছে ইলিশের উৎপাদনও

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৭
অভিযানে বেড়েছে জেল-জরিমানা, বেড়েছে ইলিশের উৎপাদনও ফাইল ছবি

ঢাকা: প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে ২ হাজার ৩শ’ ৮৯ জনের জেল এবং ৬২ লাখ ১৪ হাজার টাকা জরিমানা করেছে করেছে সরকার। বিগত বছরের তুলনায় এ বছর জেল ও জরিমানার পরিমাণ বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদফতর। এ জন্য ইলিশের উৎপাদন ১ লাখ মেট্রিক টন বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, সরকার নদ-নদীর জাটকাপ্রধান অঞ্চলে পাঁচটি অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার পর প্রতি বছর প্রজননের মৌসুমে অর্থাৎ আশ্বিন মাসের ভরা পূর্ণিমার পূর্বের চার দিন, পূর্ণিমার এক দিন এবং পরের ১৭ দিন মিলে মোট ২২ দিন মা-ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছিল। ফলে গত বছর থেকে সাত দিন বাড়ানোর ফলে ইলিশের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।

এর আগে এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ছিল ১৫ দিন। আর ২০১৫ সালের আগে ১১ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ ছিল।

জাটকা নিধন রোধ এবং মা-ইলিশ ধরার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বিগত কয়েক বছর ইলিশের উৎপাদন প্রতি বছর ১০-১২ হাজার মেট্রিক টন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন প্রায় ৪ লাখ টনে উন্নীত হয়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে বলে আশা করছে সরকার।

এ বছর প্রধান প্রজনন মৌসুমে গত ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭৬২টি অভিযান পরিচালনা করে প্রশাসন। এ সময়ে জব্দ ইলিশের পরিমাণ ৫৮ দশমিক ১৮ মেট্রিক টন। আর জব্দকৃত জালের পরিমাণ ৮৪১ লাখ ৩১ হাজার মিটার, যার অর্থমূল্য ১৫ হাজার ১৫৯ লাখ ১৯ হাজার টাকা।
 
এ বছর ২ হাজার ৬৫৮টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। আর মামলার সংখ্যা তিন হাজার ৫১টি। পরিসংখান-প্রতিবেদন মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে।
 
অধিদফতর জানায়, ২০১৬ সালে ১১ হাজার ৫৩০টি অভিযানে ৩৩ দশমিক ৯৪ মেট্রিক টন ইলিশ জব্দ করা হয়। আটককৃত জালের পরিমাণ ১৭০ লাখ ১৫ হাজার মিটার, যার অর্থমূল্য দুই হাজার ৮৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। মোবাইল কোর্টের সংখ্যা দুই হাজার ২৭১টি। মামলার সংখ্যা এক হাজার ৮১৯টি। জরিমানা ৫২ লাখ ২২ হাজার টাকা। এক হাজার ১৫৬ জনকে জরিমানা করা হয়েছিল।
 
মৎস্য অধিদফতরের উপপরিচালক এবং মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের আহ্বায়ক রমজান আলী বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর জেল-জরিমানা বেশি। গত বছরের তুলনায় উৎপাদনও বেড়েছে।
 
তিনি জানান, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে উৎপাদন ছিল ৩ লাখ ৯৫ হাজার মেট্রিক টন, এ বছর মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে ৪ লাখ ৯৫ হাজার বা ৫ লাখ মেট্রিক টন হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ের তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে। আশা করি এবার উৎপাদন বেশি হবে।
 
চলতি বছর দীর্ঘ বর্ষা এবং নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদ-নদীর শাখা-প্রশাখাতেও ইলিশ প্রবেশ করেছে বলেও জানান রমজান আলী।
 
তিনি বলেন, পদ্মা-মেঘনার ইলিশ যমুনা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদেও গেছে। পদ্মা নদী দিয়ে রাজশাহী-চাঁপাইনবাগঞ্জ দিয়ে তিস্তায় গেছে ইলিশ। তিস্তা নদীতে এবার ইলিশ পাওয়া গেছে, যা ইতিবাচক।
 
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সচেতনতা বেশি দরকার জানিয়ে রমজান আলী বলেন, জেলেসহ সবাইকেই সচেতন হতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৭
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।