সর্বশেষ রাজধানীর আগারগাঁয়ের রোকেয়া সরণীর লায়ন্স ভবনে তার অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হলেও মুবাশ্বারের নিখোঁজের প্রকৃত কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শিক্ষক মুবাশ্বার নিখোঁজের প্রায় ৬৩ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছে, মুবাশ্বারের মোবাইল ফোনের কললিস্টের তথ্য ধরেই তদন্ত কার্যক্রম এগিয়ে চলছে। তাকে উদ্ধারের জন্য যেকোনো ‘ক্লু’ খুঁজে পেতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজ মুবাশ্বার রহমানের অবস্থান সম্পর্কে আমরা এখনও কোনো তথ্য পাইনি। তবে তাকে উদ্ধারের জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন সহকারী অধ্যাপক মুবাশ্বার হাসান। ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার বাবা মোতাহার হোসেন খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি নম্বর- ৪৭১।
নিখোঁজ মুবাশ্বার হাসান ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক পাশ করেন। একসময় সাংবাদিকতাও করেছেন তিনি। পরে যুক্তরাজ্যে মাস্টার্স ও অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
এ বিষয়ে ৠাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. এমরানুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এখনও আমরা মুবাশ্বারের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি, তবে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কি কারণে তিনি নিখোঁজ হতে পারেন- সে বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে মুবাশ্বারের বিয়ে বিচ্ছেদের একটি কারণ পাওয়া গেছে। তবে বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে আমরা তাকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি বলেও জানান তিনি।
মুবাশ্বারের বাবা মোতাহের হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজের তিনদিন পার হতে চলেছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কেউ এখনও আমার ছেলেকে উদ্ধার করতে পারেনি। বিষয়টি তারা তদন্ত করছে, তবে কি কারণে মুবাশ্বার নিখোঁজ হলো- তার কোনো দৃশ্যমান কারণ এখনও খুঁজে পায়নি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
মুবাশ্বারের ছোট বোন তামান্না তাসমিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা খুব সাধারণ একটি পরিবার। আমাদের ওপর কোনো প্রকার হুমকি নেই। আমাদের পারিবারিক কোনো ঝামেলাও নেই। ’
তবে মুবাশ্বারের ব্যক্তিগত কোনো বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তামান্না তাসমিন।
এদিকে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজ মুবাশ্বার নিজের নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ছিলেন। গত অক্টোবর মাসে তার বাসায় এক ব্যক্তি ছাত্র পরিচয় দিয়ে মুবাশ্বারের খোঁজ করেছিল। এই কারণেই দক্ষিণ খিলগাঁয়ের ১২/৩ নম্বর রোডের জে/২৫ বাসার সামনে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। তবে এই বিষয়ে থানায় কোনো জিডি বা দরখাস্ত করা হয়নি।
বাড়ির সামনে বাড়তি নিরাপত্তার বিষয়ে মোতাহের হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘দক্ষিণ খিলগাঁও এলাকাটি অনেকটা নিরিবিলি। তাই বাড়িতে চোর-ডাকাতের হামলা থেকে রেহাই পেতেই এখানকার সোসাইটির সবার সঙ্গে আলোচনা করেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৭
এসজেএ/এমএইউ/