১৮৭০ সালে প্রায় ১১০ একর জমিতে স্থাপিত হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। শুরুতে এ কারখানায় প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী কর্মরত থাকলেও বর্তমানে ১ হাজার ২০৪ জনে নেমে এসেছে।
কর্মরতদের মধ্যে আবার আগামী বছর ৮০ জন ও ২০১৯ সালে আরও ৯২ জন শ্রমিক-কর্মচারী অবসরে যাবেন।
২৮টি উপ-কারখানায় (শপ) স্বল্প সংখ্যক ওই শ্রমিকদেরকে রেলের কোচ ও মালবাহী গাড়ি মেরামত এবং যন্ত্রাংশ তৈরিতে দিন-রাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে। তারপরও মাসে কমপক্ষে ২৬টি কোচ ও ২৫টি মালবাহী ওয়াগন মেরামত এবং এক হাজার ২০০ ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি করছেন তারা। আগে এখানে রেলকোচ নির্মিত হলেও লোকবলের অভাবে এখন আর হয় না।
সূত্র জানায়, রেল সংকোচন নীতির আওতায় ১৯৯১ সাল থেকে রেলওয়েতে সব ধরনের নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় সোনালী হাতছানি ( গোল্ডেন হ্যান্ডশেক) কর্মসূচির আওতায় রেলওয়ের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক-কর্মচারীকে অবসরে পাঠানো হয়। তারা সকলেই ছিলেন দক্ষ কর্মী। রেলওয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের সৈয়দপুর কারখানা শাখার সম্পাদক শেখ রোবায়তুর রহমান জানান, বর্তমান সরকার রেলবান্ধব। রেলওয়ের উন্নয়নে বিশাল উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। শুরু হয়েছে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াও। কিন্তু নানাবিধ আইনি জটিলতায় আশানুরূপ নিয়োগ থেমে আছে। ফলে দিনে দিনে জনবল সংকট আরও তীব্র হচ্ছে।
এদিকে কারখানার ক্রমবর্ধমান লোকবল সংকট নিরসনে সরকারি উদ্যোগ দাবি করে আন্দোলনে যাচ্ছে শ্রমিক-কর্মচারীরা। রেলওয়ে শ্রমিক লীগের নেতৃত্বে এ বিষয়ে গণযোগাযোগ শুরু হয়েছে। কারখানার ট্রেড ইউনিয়নগুলো আগামী ১৫ নভেম্বর শ্রমিক-কর্মচারী নিয়োগের দাবিতে সৈয়দপুর প্রেসক্লাবের মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে। দাবি মানা না হলে শুরু হবে নিয়মতান্ত্রিক বৃহত্তর আন্দোলন।
রেলওয়ে শ্রমিক লীগ সৈয়দপুর কারখানা শাখার সম্পাদক ও সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, দ্রুত লোকবল নিয়োগ করা না হলে অচল হয়ে পড়বে কারখানাটি। ফলে মুখ থুবড়ে পড়বে এর যাবতীয় উৎপাদন।
রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে এলে রেলওয়ে কারখানার সমস্যা-সংকট ও সম্ভাবনা সম্পর্কে তাকে অবহিত করা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মুহাম্মদ কুদরত ই খোদা জানান, রেলওয়েতে অন জব ট্রেনিং পদ্ধতি চালু রয়েছে। অর্থাৎ চাকরিরত অবস্থায় জ্যেষ্ঠ সহকর্মীর কাছে কাজ শিখে নেওয়া। কিন্ত জ্যেষ্ঠরা যেভাবে অবসরে যাচ্ছেন, তাতে নতুনদের কাজ শেখার সুযোগ কমে আসছে।
লোকবল নিয়োগের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন তিনিও।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৭
এএসআর