ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কাঠের তৈরি বাইক চলবে জ্বালানি ছাড়াই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭
কাঠের তৈরি বাইক চলবে জ্বালানি ছাড়াই কাঠের তৈরি বাইকে বসে আছেন হুমায়ুন

হবিগঞ্জ: ডিজিটালের উদ্ভাবনী যুগে কাঠ, লোহা আর প্লাইউড দিয়ে বাইক তৈরি করে মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন হবিগঞ্জের মাধবপুরের এক যুবক। বাইকটি দেখতে আর-১ বা অ্যাপাচি মোটরসাইকেলের মতো।

সম্প্রতি উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামের হুমায়ুন কবীর নামে এক যুবক বাইকটি জনসম্মুখে আনেন এবং সেটি চালিয়ে দেখান।

তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হুমায়ুন কবীরের তৈরি বাইকটি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে চলবে।

এটি চালাতে কোনো ধরনের জ্বালানি তেল বা গ্যাস প্রয়োজন হবে না। চলবে ব্যাটারির মাধ্যমে। বাইকটি তৈরিতে তার দুই বছর সময় লেগেছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৪২ হাজার টাকা।

হুমায়ুন বাংলানিউজকে বলেন, এটি তৈরি করতে টাকার জোগান এবং দরিদ্র অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন লোকজনের বাড়িতে কাঠমিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন তিনি। হুমায়ুন ওই গ্রামের নাসির উদ্দিন এবং আফিয়া খাতুনের একমাত্র সন্তান। তার জন্মের তিন মাস পর তার বাবা নাসির উদ্দিন পরিবার ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।   মা আফিয়া খাতুন একমাত্র সন্তানকে কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছেন।

হুমায়ুন২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় সিলেট বোর্ডের অধীনে হবিগঞ্জ কবির কলেজিয়াট কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করেন তিনি।

চৌমুহনী ইউনিয়নের ডা. জরিফ হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে কারিগরি প্রতিভার জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের (অরুন) নজরে পড়ে সে। তার উৎসাহ ও সহযোগিতায় হুমায়ূন কবির ছোট খাটো যান্ত্রিক খেলনা তৈরিতে সক্ষম হয়। পরে  হবিগঞ্জ কবির কলেজিয়েট একাডেমিতে অধ্যয়নকালে ২০১৫ সাল থেকে কাঠ দিয়ে ব্যাটারি চালিত মোটরসাইকেল তৈরির কাজ শুরু করে। টানা ২ বছর সাধনার পর হুমায়ূন কবির কাঠের তৈরি ব্যাটারি চালিত এ মোটরসাইকেলটি তৈরিতে সক্ষম হয়।

ডা. জরিফ হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন অরুন বাংলানিউজকে বলেন, হুমায়ুন কাঠ দিয়ে ব্যাটারি চালিত মোটরসাইকেল আবিষ্কার করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। মোটরসাইকেলটির ডিজাইন হুমায়ূন নিজেই করেছে। ব্যাটারি চালিত মোটরসাইকেল স্বল্প দামে এদেশের মানুষের কল্যাণে বাজারজাত করতে আগ্রহী সে।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোকলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এ রকম একটি বিষয় আমি মৌখিকভাবে শুনেছি। হুমায়ুন কবীর যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রশাসন তাকে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫১ ঘণ্টা, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।