ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় মালিক-চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৭
প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় মালিক-চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

মাগুরা: ভুল চিকিৎসায় বীথি কর্মকার নামে এক প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় ওই ক্লিনিকের মালিক শারমিন বেগম ও  চিকিৎসক এনামুল কবিরসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) নিহতের বাবা বিষ্ণুপদ কর্মকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মাগুরা শহরের ভায়নার মোড় এলাকায় বন্ধ করে দেয়া অনুমোদনহীন একটি বেসরকারি ক্লিনিকে বৃহস্পতিবার রাতে (২১ ডিসেম্বর) ভুল চিকিৎসায় বীথি কর্মকার নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া যায়।

ঘটনার পর পরই ক্লিনিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালিয়ে গেছে।

জানা যায়, চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর এ ক্লিনিকটিকে অনুমোদন ছাড়া রোগী ভর্তি, সিজারিয়ান অপারেশন ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের দায়ে নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে বন্ধ করে দিয়েছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু সম্প্রতি গোপনে ক্লিনিকটি আবার খুলে ব্যবসা শুরু করেন মালিক শারমিন বেগম।
 
নিহত বীথির বাবা বিষ্ণুপদ কর্মকার ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানোর জন্য বৃহস্পতিবার রাতে মাগুরা শহরের ভায়নার মোড় এলাকায় শারমিন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় তার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে বীথি কর্মকারকে। এ সময় বীথি সুস্থ অবস্থায় একাই সিঁড়ি বেয়ে দুই তলায় ওঠেন এবং ক্লিনিকে অন্য রোগীদের সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলেন ও দোয়া  চান।

ঘণ্টাখানেক পর বীথিকে সিজার করানোর জন্য অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ইনজেকশান পুশ করলে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষ অবহেলা করে এক ঘণ্টা পর রোগীকে ফরিদপুর নেয়ার কথা বলে।

রোগীর স্বজনদের সন্দেহ হলে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালে নিলে রাত ১১টার দিকে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. কৃষ্ণ দাস বিশ্বাস তাকে মৃত হিসেবে পান বলে জানান।  

এ ঘটনায় রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা ক্লিনিকের সামনে বিক্ষোভ করলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ব্যাপারে সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

মাগুরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুল বলেন, নিহতের বাবা বিষ্ণুপদ কর্মকার বাদী হয়ে ক্লিনিকের মালিক শারমিন বেগম, ডা. এনামুল কবির ও ওয়ার্ডবয় রাজু আহমেদসহ অজ্ঞাত আরো তিনজনের নামে শুক্রবার বিকেলে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি তদন্ত করে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।  

মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. মুন্সী সাদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, মাগুরায় বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৮টি ক্লিনিক ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শারমিন ক্লিনিকে ২৩ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও সিলগালা করে দেয়। গোপনে ক্লিনিকটিতে আবারো রোগী ভর্তি ও চিকিৎসার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।