ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মেয়র নেই বলে খেই হারালো সড়কবাতি-সিসিটিভি প্রকল্পও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
মেয়র নেই বলে খেই হারালো সড়কবাতি-সিসিটিভি প্রকল্পও রাজধানীর সড়ক এলইডি বাতিতে আলোকিত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। (ফাইল ফটো)

ঢাকা: দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের আদলে ঢাকা শহরে ঝলমলে এলইডি বাতি ও সিসিটিভি স্থাপন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এলইডি সড়কবাতি, সিসিটিভি ক্যামেরা ও সিসিটিভি কন্ট্রোল সেন্টার সরবরাহ ও স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়। ৪৪২ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি অনুমোদনও পেয়ে যায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায়।

কিন্তু মেয়র প্রয়াত হওয়ার পর যেন খেই হারিয়ে ফেলেছে তার স্বপ্নের প্রকল্পটি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রকল্পটির জন্য ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও এই অর্থের ১২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকাই খরচ করা হয়নি।

মাত্র ৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা খরচের প্রক্রিয়াধীন। ‘বাস্তব সমস্যার’ কারণে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে ১২১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বর্তমান অর্থ-বছরে অব্যয়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানিয়ে দিয়েছেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) মেসবাহুল ইসলাম।

প্রয়াত আনিসুল হকের স্বপ্নের প্রকল্পে ছিল, ডিএনসিসির সড়কগুলোতে পাঁচ হাজার সিসি ক্যামেরা ও ৪০ হাজার নতুন এলইডি বাতি স্থাপন করা হবে। একটি কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হবে। নান্দনিক সড়কবাতিগুলোর ওয়ারেন্টি থাকবে অন্তত ১০ বছর।

ডিএনসিসির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক (ফাইল ফটো)
কিন্তু আনিসুলের প্রয়াণে প্রকল্পটি এভাবে ধাক্কা খাওয়ায় সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা আক্ষেপ করেন। তারা বলেন, নগরপিতা আনিসুল হক বেঁচে থাকলে দ্রুত সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে হয়তো এডিপি’র সব অর্থ ব্যয় করে প্রকল্পটি অনেকদূর এগিয়ে নিতেন। অথচ চলতি অর্থবছরে স্বপ্নের প্রকল্পটির অগ্রগতি এখনও ‘শূন্য’ বলা চলে। ফলে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যেই এলইডি সড়কবাতি ও সিসিটিভি স্থাপনে সংশয় দেখা দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘মেয়রের শূন্যতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ধীরগতি এসেছে। তবে চলমান রয়েছে। মেয়র থাকলে তিনি আরও দ্রুত সময়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, যেটা আমরা করায় দেরি হচ্ছে। তবে এটা মেয়রের স্বপ্নের প্রকল্প। আমরা দ্রুত এটা বাস্তবায়ন করবো। এ নিয়ে সামনে মিটিং করবো। ’

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সিটি করপোরেশনের সেবাদাতা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন সহজ করে দেবে স্থাপিত এলইডি লাইট এবং সিসিটিভি। খুব সইজেই অবৈধ পেশা, অবৈধ পার্কিংসহ অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। পাশাপাশি নগরবাসীর নিরাপদ নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা যাবে।
 
৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার আয়তন প্রায় ৮২ দশমিক ৬৩ বর্গকিলোমিটার। এসব এলাকায় প্রায় ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার সড়ক ও ২৩০ কিলোমিটার ফুটপাত রয়েছে। এ সড়ক-ফুটপাতজুড়ে প্রায় ৪৫ হাজার হাই প্রেসার ও লো-প্রেসার সোডিয়াম এবং টিউবলাইট রয়েছে। এসব সোডিয়াম ও টিউবলাইটের পরিবর্তে আধুনিক, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব এলইডি সড়কবাতি স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রকল্পের আওতায়।

প্রকল্প পরিচালক ও ডিএনসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আজাদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্যার (মেয়র আনিসুল হক) তিন মাস ছিলেন না, এটার প্রভাব পড়েছে প্রকল্পে। স্যার বিশ্বমানের প্রযুক্তির সড়কবাতি স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। যার ওয়ারেন্টি হবে ১০ বছর। আমরা স্যারের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছি। ’
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
এমআইএস/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।