ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রোহিঙ্গা নির্মূলে পরিকল্পিত গণহত্যা: নোবেলজয়ী ৩ নারী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
রোহিঙ্গা নির্মূলে পরিকল্পিত গণহত্যা: নোবেলজয়ী ৩ নারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নোবেলজয়ী তিন নারী

ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জাতিকে নির্মূল করতে দেশটির সরকার পরিকল্পিত গণহত্যা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শান্তিতে নোবেল জয়ী তিন নারী।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ মন্তব্য করেন তারা।

এর আগে সোমবার কক্সবাজারের টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরির্দশন করেন নোবেল জয়ী নর্দান আয়ারল্যান্ডের ম্যারিড ম্যাগুয়ের, ইরানের শিরিন এবাদি ও ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে নোবেল জয়ী তিন নারী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় তাদের মর্মস্পর্শী অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।

সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

ম্যারিড ম্যাগুয়ের সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যা দেখেছি তাতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায় এখনো কীভাবে নিরব রয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতায় বিষ্ময় প্রকাশ করেন তিনি।  

মানবিক কারণে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন ম্যারিড ম্যাগুয়ের। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘কাইন্ড মাদার’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

রোহিঙ্গাদের ওপর ঘটে যাওয়া বর্বরতার দায় অবশ্যই মিয়ানমার সরকারকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন ইয়েমেনের সাংবাদিক ও অধিকারকর্মী তাওয়াক্কুল কারমান বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের খবর যতটুকু প্রচারিত হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি ঘটনা ঘটেছে সেখানে।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেশটির সরকার ও সেনাবাহিনীর আচারণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা জাতিগত নিধনের পরিকল্পিত সরকারি নীতি।  

তাওয়াক্কুল কারমান বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের সময়ে একশ’ উদ্বাস্তু নারীর সঙ্গে কথা বলার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে কারমান বলেন, ওই নারীরা মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।

এতিম শিশুদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অধিকাংশ শিশুর অভিভাবককে তারা হত্যা করেছে।

রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো গণহত্যার জন্য দায়ীদের আইনের আওয়তার আনার আহ্বান জানান ইরানের শিরিন এবাদি।

এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৭৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সাথে চুক্তির কথা উল্লেখ করেন তিনি।  

মিয়ানমারের নাগরিক উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের নিজ মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।  

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান।

 সু চিকে আন্তর্জাতিক আদালতে দাঁড় করাবেন ৩ নোবেলজয়ী

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।