মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ী ও বন্দোরখোলা। এই তিন ইউনিয়ন পদ্মা নদী বেস্টিত।
বসতভিটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট ও ফসলি জমি হারিয়ে প্রতিদিনই নিঃস্ব হচ্ছে এই এলাকার মানুষ। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে এ এলাকার অধিকাংশ স্থানই পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভাঙনের আগাম অবস্থা বোঝাও কঠিন হয়ে পড়েছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাছপালা চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে। কোনো মতে বসতবাড়ি ভেঙে নিয়ে নিরাপদ স্থানে ছুটছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ।
জানা গেছে, চলতি মাসে এই তিন ইউনিয়নে চারটি স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ পাঁচ শতাধিক ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে গ্রামীনফোনের টাওয়ারসহ শত শত ঘর-বাড়ি, ব্রিজ, কালভার্ট, স্কুলসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে শিবচরের পদ্মা নদী বেষ্টিত চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ী ও বন্দোরখোলা ইউনিয়নে দেখা দিয়েছে ব্যাপক নদী ভাঙন। গত এক সপ্তাহে এই এলাকার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে কমপক্ষে তিন শতাধিক পরিবার ঘর-বাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছে।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চারটি বিদ্যালয় ভবন, পাঁচ শতাধিক ঘর-বাড়িসহ চরজানাজাত ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিক, খাসেরহাটের অর্ধশত দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চরজানাজাত ইউনিয়নের মাধ্যমিক স্কুল চরজানাজাত ইলিয়াছ আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, আব্দুল মালেক তালুকদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মজিদ সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বন্দরখোলার ৭২ নম্বর নারিকেল বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়েছে ইতোমধ্যেই।
কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আতাহার বেপারি জানান, গত এক সপ্তাহে পদ্মা নদীর ব্যাপক ভাঙনে কাঁঠালবাড়িসহ তিনটি ইউনিয়নে অসংখ্য বাড়িঘর স্কুলসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বসতভিটা হারিয়ে সড়কে, খোলা স্থানে আশ্রয় নিয়েছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষ।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান আহমেদ বলেন, শিবচরের চরাঞ্চলে পদ্মা নদীর ব্যাপক ভাঙনে আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক ঘর-বাড়ি। এ নিয়ে চলতি বছর পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, চারটি স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
আরএ