ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কন্যা জন্ম দেয়ায় স্ত্রীকে তালাক, ৯ দিনের শিশুকে বিক্রি 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
কন্যা জন্ম দেয়ায় স্ত্রীকে তালাক, ৯ দিনের শিশুকে বিক্রি 

কুষ্টিয়া: পর পর তিনটি কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন রবিউল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। এছাড়া তালাকের পর স্থানীয়দের সহায়তায় ওই বাবা ৯ দিনের কন্যা শিশুকে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুণ্ডি পাইকপাড়া এলাকায়।  

জানা যায়, খলিসাকুণ্ডি ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে রবিউলের সঙ্গে একই এলাকার রেজাউল হকের মেয়ে জেসমিনের ১০ বছর আগে বিয়ে হয়।

বিয়ের পর সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। পরে তাদের দু’টি কন্যা সন্তান হয়। এরপর ৭ নভেম্বর আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় জেসমিন। এ নিয়ে তিনটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় সে। এ অপরাধে ৯ দিনের শিশুকে সহ তাকে তালাক দেয় তার স্বামী রবিউল। পরে স্থানীয় মাতব্বররা মিলে দর-কষাকষি করে ওই শিশুকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। শিশুটিকে একই এলাকার ঈদগাহ পাড়ার আয়ূব আলীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

জেসমিন অভিযোগ করে বলেন, তিনটি কন্যা সন্তান হওয়ায় আমাকে আমার স্বামী জোর করে স্থানীয়দের সহায়তায় তালাক দিয়েছেন। সেসঙ্গে আমার ৯ দিনের মেয়েকে মাতব্বররা বিক্রি করে দিয়েছেন।

জেসমিনের বাবা রেজাউল হক বলেন, বিয়ের পর আমার মেয়ে দু’টি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। কিছুদিন আগে আরো একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। এজন্য আমার মেয়েকে তালাক দেয় তার স্বামী রবিউল। গত তিন দিন আগে স্থানীয় মেম্বার শরিফুল, মণ্ডল শহিদুল ইসলাম, খলিসাকুণ্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান আসলাম টাকার বিনিময়ে আমার মেয়েকে তালাক দিয়ে দেয় এবং আমার নাতনিকে বেঁচে দেয়। আমার মেয়ে বাচ্চা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা জোর করে কেড়ে নিয়ে গেছে ৯ দিনের শিশুকে। পরে শুনেছি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তারা বিক্রি করে দিয়েছেন। এরপর আমি বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানাই।  

এদিকে, একাধিকবার রবিউলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি।  

স্থানীয় ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিচারে আমি ছিলাম না।  

খলিসাকুণ্ডি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি, তবে কারা বিচার করেছে বা কি হয়েছে সেটা জানি না।  

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৮
এমএএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।