ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

এখন কয়েকটা বলছি, ভবিষ্যতে আরো বলবো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮
এখন কয়েকটা বলছি, ভবিষ্যতে আরো বলবো শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ছবি: পিআইডি

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধ ও একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাজাপ্রাপ্তদের স্বজন, দুর্নীতিবাজ, বাংলাভাই-জঙ্গি মদদদাতা, জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এই অপরাধীরা যেন ভোট না পায়।

শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অপরাধীদের চেয়ে বিএনপিতে কি ভালো মানুষ ছিল না।

নাকি অপরাধ করলে তাদের কাছে যোগ্য হয়, সেটা আমার প্রশ্ন।

তিনি বলেন, এভাবে জামায়াতের ২২ জন এবং বিএনপিতে যারা অপরাধী বা অপরাধীর পরিবার তারাই নমিনেশন পেয়েছে। যারা এ ধরনের মানবতাবিরোধী কাজ করেছে তাদের নির্বাচিত করে দেশটিকে কোথায় নিয়ে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, যত রকমের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত, মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত, বা সাজাপ্রাপ্তদের স্বজন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্তদের পরিবার নমিনেশন পেয়েছে। এরা যদি নির্বাচিত হয়ে দেশে আসে সেই দেশের কি অবস্থা হবে, মানুষের জানমালের কি হবে। এদেশের শান্তি কীভাবে থাকবে, অগ্রগতি কীভাবে হবে?

আরও পড়ুন>>>‘খামোশ’ বললেই জনগণ চুপ হবে না, কামালকে হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের একটা ওয়াদা ছিল ক্ষমতায় এলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবো। মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত আমরা ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল করে তাদের বিচার শুরু করেছি বিচারের রায়ও কার্যকর করা হয়েছে।

‘যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত, মুক্তিযুদ্ধে যাদের আমরা পরাজিত করলাম আজ আমরা দেখি, তাদেরই পরিবারের স্বজনদের ধানের শীষ দেওয়া হলো! আর একই ধানের শীষ নিয়ে যারা এক সময় আমাদের দলে ছিল, এখন বিএনপি জোটের সঙ্গে চলে গেলো তারা কীভাবে নির্বাচন করবে? এই প্রশ্নের জবাব কি তারা জাতির কাছে দিতে পারবে।

এখন কয়েকটা বলছি, ভবিষ্যতে আরো বলবো
ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পাওয়া বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঠাকুরগাঁ-২ আসন থেকে যাকে দেওয়া হয়েছে তার নাম মাওলানা আবদুল হামিদ, সে ছাত্র সংঘের সদস্য ছিল এবং আলবদর বাহিনীর সদস্য ছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পথ দেখিয়ে দেখিয়ে এরাই নিয়ে গিয়েছিল।

তিনি বলেন, পাবনা-১ এ দেওয়া হয়েছে মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নজিবুর রহমান। যে নিজামীর ফাঁসি হয়েছে যুদ্ধাপরাধে মানবতাবিরোধী অপরাধে কাজ করবার জন্য। এই বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পেছনে তার হাত ছিল সবচেয়ে বেশি।

‘পিরোজপুর-১ এ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছেলে শামীম বিন সাঈদী। ’

‘কক্সবাজার-২ এ ধানের শীষে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আজাদকে। ’

‘বগুড়া-৩ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে মাসুদা মোমিন তালুকদার, মানবতাবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক সেলিম তালুকদারের স্ত্রী। ’ 

‘খুলনা-৫ এ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পারওয়ারকে। ’

‘সাতক্ষীরায় গাজী নজরুল ইসলাম। সেও যুদ্ধাপরাধী। ছাত্রসংঘের সদস্য, হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল। ’

‘চট্টগ্রাম-৪ থেকে ইসহাক চৌধুরী। ভারতে বসে একজন নেতা আসলাম চৌধুরী সে মোসাদের ষড়যন্ত্র করছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তারই ভাই হচ্ছে ইসহাক চৌধুরী। ’

‘কাজেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ’

‘রংপুর-৩ এ নমিনেশন দেওয়া হয়েছে রিটা রহমান। জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ডের আসামি মেজর অবসরপ্রাপ্ত খায়রুজ্জামানের স্ত্রী। ’

‘নেত্রকোনা-৪ এ একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিএনপি মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্রপতিমন্ত্রী লুৎফর জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান। ’

‘কুমিল্লার ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সে আইএসআইয়ের এজেন্টের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে, কীভাবে ষড়যন্ত্র করছে তা সবার জানা। ’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘বাংলাভাই-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি হয়েছিল বিএনপি আমলে। ওই রাজশাহী বেল্টে তারা অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে মিছিল করেছে। এই বাংলাভাই-জঙ্গিবাদ যারা সৃষ্টি করেছিল যারা মদদ দিয়েছিল তারা মোটামুটি সবাই নমিনেশন পেয়ে গেছে। যেমন ব্যরিস্টার আমিনুল ইসলাম রাজশাহী-১, মিজানুর রহমান মিনু রাজশাহী-২, রুহুল কুদ্দুস দুলু নাটোর-২, নাদিম মোস্তাফাকে রাজশাহী-৫ থেকে বিএনপি নমিশন দিয়েছে। ’ 

‘টাঙ্গাইল-২ এ যাদের নমিনেশন দেওয়া হয়েছে সে হচ্ছে সালাউদ্দিন টুকু। সে খালেদা জিয়ার ক্যাবিনেটের প্রতিমন্ত্রী একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্ত সালামের ভাই। ’

বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮
এমইউএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।