ঢাকা, রবিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১২ মে ২০২৪, ০৩ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ঢাকা-৩

‘পরিকল্পনা’য় গয়েশ্বর, মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিপু

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
‘পরিকল্পনা’য় গয়েশ্বর, মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিপু ঢাকা-৩। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ক’দিন পরই নির্বাচন। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণা। নানা প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ভোটারদের মন জয় ও তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। 

রাজধানীর বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রচারণা তুঙ্গে। তবে সেভাবে মাঠে নেই বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা।

 

ঢাকা মহানগরের সংসদীয় আসন ঢাকা-৩ নির্বাচনী  এলাকা ঘুরে এবং ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।  

এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই হেভিওয়েট প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা মার্কায় নসরুল হামিদ বিপুর সঙ্গে লড়ছেন বিএনপির গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ভোটাররা বলছেন, প্রচারণায় মাঠে রয়েছেন নসরুল হামিদ বিপু। সেভাবে গয়েশ্বর চন্দ্রকে দেখা যায় না।

কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে চোখে পড়েছে, নৌকার পোস্টার-ব্যানার। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নচিত্র নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন নৌকার প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দু-এক জায়গায় ধানের শীষের পোস্টার থাকলেও সেভাবে চোখে পড়েনি কাউকে প্রচারণা চালাতে।  

দীর্ঘদিন ধরে কেরানীগঞ্জের আগানগর সিনেমা হলের সামনে চা বিক্রি করেন সামাদ মিয়া। ভোট নিয়ে সকাল-বিকাল আড্ডা চলে তার দোকানেও। মাঝে মধ্যে তিনিও যোগ দেন সেই ভোটের আড্ডায়।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, 'মনে কয় এখানে মন্ত্রী-ই (নসরুল হামিদ) আবার (জয়ী) হবেন। বিএনপির যিনি দাঁড়াইছেন (গয়েশ্বর) তাকে আমরা মাঠে দেখি না, সে একদিন আইসা ভোটও চায় নাই। ' 

‘দোকানে যারা আয় তারাও কয় এইখানে মন্ত্রী সাহেব-ই (জয়) হইবেন। তাইনে (তিনি) তো এলাকায় বহুত (অনেক) কাজও (উন্নয়ন) করেছেন। তাই তারই হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ’

ঢাকা-৩ আসনটি ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার জিনজিরা, আগানগর, তেঘরিয়া কোন্ডা ও শুভাঢ্যা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

এসব এলাকা ঘুরেও নৌকার ব্যাপক প্রচারণা লক্ষ্য করা গেছে। শুভাঢ্যা এলাকার ভোটার আকবর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, 'দুইজনই বড় প্রার্থী। ভোট সঠিক হলে ফল কী হবে সেটা বলা মুশকিল। তবে প্রচার-প্রচারণায় মন্ত্রীই এগিয়ে। ধানের শীষের কাউকে প্রচারণায় আমরা দেখিনি। ' 

শনিবার (২২ ডিসেম্বর) নির্বাচনী প্রচারণার সময় জিনজিরা এলাকায় কথা হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নসরুল হামিদের সঙ্গে।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, 'আমার এলাকায় নির্বাচনী এলাকায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে যেটা বোঝায় সেটা সম্পূর্ণরূপে রয়েছে। এখানে কোনোদিন কাউকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ কেউ দিতে পারবে না। আমরা চাই বিরোধী পক্ষও মাঠে থাকুক। '

নসরুল হামিদ বলেন, 'বিগত ১০ বছর কেরানীগঞ্জে যে উন্নয়ন করেছি তাতে মানুষ নৌকাকেই বেছে নেবে আশাকরি। আমি পুনরায় নির্বাচিত হলে আর আমার দল সরকার গঠন করলে আগামী ৫০ বছর পর কেরানীগঞ্জ কেমন হবে সেই মেগা পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছি। আমি চাই এলাকাকে সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত এবং পরিচ্ছন্ন করে গড়ে তুলতে। ' 

তিনি বলেন, 'এখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলে আসছে। এই কেরানীগঞ্জ হবে দক্ষিণবঙ্গের গেটওয়ে। তাই এখানকার গুরুত্ব দিন দিন বেড়ে চলেছে। নির্বাচিত হলে কেরানীগঞ্জকে নিয়ে আরো ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হবে। '

এদিকে স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খুব বেশি একটা প্রচার-প্রচারণায় নামেন না। মাঝে মাঝে দুই-একদিন নির্বাচনী এলাকায় এলেও কিছু সময় থেকে আবার ঢাকায় ফিরে যান।  

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিএনপির কর্মী রফিকুল ইসলাম বলেন, 'উনি (গয়েশ্বর) আসলে ঢাকায় বসে নির্বাচন করছেন। স্থানীয় ভোটারদের মাঝে আমরা যারা ধানের শীষে ভোট চাইবো তারা তো যেতে পারছি না। কারণ নেতা না থাকলে কিভাবে মানুষের কাছে যাবো!'

নির্বাচনী এলাকায় না পেয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বিএনপির প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় উল্টো প্রশ্ন করেন, ‘‌‌‌সারাদেশে কোথাও বিএনপির পোস্টার আছে? নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে?’ 

নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি ঢাকায়। তবে কখন প্রচারণায় নামবো তা বলতে পারছি না। ভেবে দেখি নামবো কি-না। ’

৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা-৩ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ১১ হাজার ৬৪৭ জন।  ২০০৮ সালের নির্বাচনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হন নসরুল হামিদ। ২০১৪ সালেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৮
এসএম/এমএ/এমকেএম 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।