আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন গত দুইটি মন্ত্রিসভায় বিভিন্ন দল থেকে প্রতিনিধি রাখা হলেও এবার শুধু আওয়ামী লীগের নেতারাই থাকছেন।
সেই সঙ্গে জাতীয় ও দলীয় রাজনীতিতে প্রবীণ ও আলোচিত নেতাদের রাখা হয়নি।
এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি (জেপি), ওয়ার্কার্স পার্টি, দুই জাসদ, তরিকত ফেডারেশন, বিকল্পধারা মহাজোটে শরিক হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির একজন মন্ত্রী, দুই জন প্রতিমন্ত্রী, ওয়ার্কার্স পার্টির একজন, জাসদের একজন, জাতীয় পার্টির (জেপি) একজন মন্ত্রী ছিলেন।
পড়ুন>>বাদ পড়লেন যে ‘হেভিওয়েটরা’
এবার এরই মধ্যে জাতীয় পার্টি ঘোষণা দিয়েছে, দলটি সংসদে বিরোধী দল থাকছে। বিরোধী দলের নেতা হচ্ছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
তবে অন্য দলগুলো আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা নিয়ে ভোটে অংশ নেওয়ায় সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকায় যেতে পারবে না।
এবারের মন্ত্রিসভায় বলতে গেলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন মাত্র দুইজন। তারা হলেন- দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের; যিনি বিদায়ী মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। এবারও সেখানেই রাখা হয়েছে তাকে।
পড়ুন>>কে কোন মন্ত্রণালয়ে
অপরজন হলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক; যিনি মতিয়া চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। এর আগে ২০০৯ সালের মন্ত্রিসভায় ড. আব্দুর রাজ্জাক খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, নূরুল ইসলাম নাহিদ গত মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করলেও এবার তারা বাদ পড়েছেন।
আওয়ামী লীগের বিগত দুই সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে টানা ১০বার এবং এইচএম এরশাদের সরকারের সময় দুইবার মোট ১২ বার জাতীয় বাজেট দিয়ে রেকর্ড করেছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সফল অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার স্বীকৃতি রয়েছে। এবারের মন্ত্রিসভায় তিনি নেই। বাদ পড়েছেন শ্রমিক রাজনীতিতে প্রভাবশালী হয়ে ওঠা পরপর দুইবারের মন্ত্রী শ্রমিক নেতা শাজাহান খান।
বাদ পড়েছেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট এবং জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ তিন নেতা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জুও।
বাদের তালিকায় রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এএইচ মাহমুদ আলী, আসাদুজ্জামান নূর, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
বিদায়ী মন্ত্রিসভায় রাশেদ খান মেনন ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জু প্রত্যেকেই পর্যায়ক্রমে দুইটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। জাতীয় পার্টির রাজনীতিতে প্রভাবশালী এবং দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবার মন্ত্রিসভায় বাদ পড়েছেন। বিদায়ী মন্ত্রিসভায় তিনি পর্যায়ক্রমে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন।
এবারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে যারা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে রয়েছেন তারা হলেন, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি, তিন সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম এবং মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
অর্থ সম্পাদক টিপু মুনশি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল মজিদ হুমায়ুন ও মন্নুজান সুফিয়ানের ঠাঁই হয়েছে নতুন মন্ত্রিসভায়।
সোমবার (০৭ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গভবনে তাদের শপথ পড়াবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৯
এসকে/এমএ