ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এক বাঘাইড়ের দাম লাখ টাকা!

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এক বাঘাইড়ের দাম লাখ টাকা! মেলার নিয়ে ৭০ কেজি ওজনের বাঘাইড়/ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: লাল পলিথিনে বিছানো চৌকির ওপর রাখা হয়েছে একটি বাঘাইড়। মাছের পিঠের ওপর তখনও যমুনার পানিতে থাকা এক ধরনের শেকড়ের মতো কিছু একটা শোভা পাচ্ছিলো। কারণ বাঘাইড়টি তখন জীবিত। তবে অন্য মাছের মতো নড়াচড়া করতে পারছিলো না।

এ বাঘাইড় মাছের ওজন ৭০ কেজি। প্রতিকেজি মাছের দাম হাঁকা হয়েছে ১৫০০ টাকা করে।

সেই হিসাবে ৭০ কেজি ওজনের এ মাছের দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। অবশ্য একজন ক্রেতা সাহস করে ১২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত দাম হাঁকিয়েছেন। কিন্তু এ দামে পুরো মাছ বিক্রি করতে রাজি নন বিক্রেতা।

বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ইছামতির নদীর তীরে পোড়াদহ এলাকায় বসেছে ঐতিহ্যবাহী ‘পোড়াদহ’ মেলা। সেই মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিলো ৭০ কেজি ওজনের এ বাঘাইড় মাছটি।

এ মাছের মালিকের নাম মো. বিফল। একই উপজেলার গোলাবাড়ী মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। প্রত্যেক বছর এ মেলায় বড় বড় মাছ আমদানির চেষ্টা করেন থাকেন। তবে এবার ভাগ্যটা অনেক ভালো। কারণ যমুনা থেকে জ্যান্ত (জীবীত) মাছ মেলায় উঠাতে পারবো তা ভাবতেও পারি নাই। তাও আবার বাঘাইড় মাছ।

...ব্যবসায়ী মো. বিফল বাংলানিউজকে জানান, সাধারণ অন্য প্রজাতির মাছ জ্যান্ত অবস্থায় মেলায় নিয়ে আসা যায়। কিন্তু বাঘাইড় মাছ জ্যান্ত অবস্থায় নিয়ে আসাটা অত্যন্ত কঠিন। তার ভাষায়, ‘ব্যাটে বলে মিল না হলে যেমন চার-ছয় হয় না, তেমনি মেলার আগের রাতে যমুনায় মাছটি ধরা না পড়লে জ্যান্ত অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব হতো না। সেক্ষত্রে ২-৪দিন আগে ধরা পড়া মাছ মেলায় নিয়ে আসতে হতো।

তিনি আরও জানান, ওইসব মাছও জ্যান্ত থাকে। স্বাদেও কোনো তফাৎ নেই। তবে আগের রাতে ধরা পড়ার পরদিন মেলায় বাঘাইড় মাছ এটা তার মতো ব্যবসায়ীর জন্য বিরাট ভাগ্যের ব্যাপার বলে মনে করেন বিফল।

চাহিদামতো দামে পুরো মাছ বিক্রি করতে না পারলে অবশেষে মাছটি কেটে কেটে বিক্রি করবেন বলেও জানান এ মাছ বিক্রেতা। সেক্ষেত্রে দাম কম হবে কি না সেটা সময় বলে দেবে। তবে আপতত কম দামে মাছটি বিক্রি করতে চান না তিনি।   

সরেজমিনে দেখা যায়, মাছটি ঘিরে উৎসুক মানুষের ভিড়ের কোনো কমতি ছিলো না। মাছসহ অনেকটা দোকানিকে ঘিরে রেখেছিলেন উৎসুক জনতা। তাদের মধ্যে মাছ কেনার চেয়ে দেখার লোকজনই ছিলো বেশি। আবার অনেকে মাছসহ নিজের দৃশ্যটি স্মৃতিময় করতে রাখতে মোবাইলে সেলফি ধারণে ছিলেন বেশ ব্যস্ত। এরই মধ্যে দু’একজন ক্রেতা দেখার পাশাপাশি মাছটির দাম করছিলেন।

নুরুল ইসলামের নামের এক ব্যক্তি বগুড়া সদর উপজেলা থেকে এ মেলায় এসেছেন। বাঘাইড় মাছ কিনতে তারা মেলায় আসা। কিন্তু এতোবড় মাছ একার পক্ষে কেনা সম্ভব না।

কারণ হিসেবে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মাছ দেখে কিনতে মন চায়। কিন্তু সাধ্যও তো থাকতে হবে। বিক্রেতা যে হারে মাছের দাম চান তাতে মাছের দামটি কত আসে তাও হিসেব করতে হবে। তাতে বাজেটে পড়ে না। তবে কেটে বিক্রি করলে তিনি এ মাছ কিনবেন- যোগ করেন নুরুল ইসলাম।

গাবতলী উপজেলা সদর থেকে আসা হামিদুল ইসলাম বলেন, এতোবড় মাছ দামের দিক বিবেচনা করে তার একার পক্ষে কেনা সম্ভব না। তবে বিক্রেতা কেটে বিক্রি করলে তিনি এ মাছ কিনবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এমবিএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।