ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

চিকিৎসকসহ ২ জনকে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ, তদন্ত কমিটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
চিকিৎসকসহ ২ জনকে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ, তদন্ত কমিটি শেবাচিমে ময়লার স্তূস্পে ৩১টি অপরিণত শিশুর (ফিটাস) মরদেহ উদ্ধার

বরিশাল: বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের ময়লার স্তূস্পে ৩১টি অপরিণত শিশুর (ফিটাস) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।

পাশাপাশি হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. খুরশীদ জাহান বেগম এবং ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ জোৎসা আক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে।  

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত মধ্যরাত ১২টায় হাসপাতাল পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, ৩১ অপরিণত শিশুর (ফিটাস) ভ্রুণ উদ্ধারের ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানতে চান এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন।

যেহেতু চিকিৎসক ও নার্সদের (সেবিকা) বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার (সাময়িক বরখাস্ত) এখতিয়ার হাসপাতাল প্রশাসনের নেই। তাই বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অধিদফতরে সুপারিশ পাঠানো হচ্ছে। যেখানে সাময়িক বরখাস্ত করার কথা উল্লেখ থাকবে।

তিনি বলেন, রাতেই সুপারিশের কাগজ তৈরি করা হয়েছে, মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে ই-মেইলের মাধ্যমে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। এর পাশাপাশি পুরো ঘটনার তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। যেখানে একজন অধ্যাপক সমমর্যাদার কর্মকর্তা প্রধান হিসেবে থাকবেন। মঙ্গলবার সকালে ওই কমিটিরও অনুমোদন দেওয়া হবে। কমিটির তদন্তে যারাই দোষী প্রমাণিত হবেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিধিঅনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হাসপাতালের ৫০ বছরের ইতিহাসে এটাই প্রথম এবং লজ্জাজনক ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্বায় এড়ানোর সুযোগ কারো নেই, তবে গাইনি বিভাগের প্রধান কিংবা রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার বা নার্স ইনচার্জও যদি বিষয়টি আমাদের জানাতেন তবে এমনটা হতো না।

সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত পৌনে ৯টার দিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এসব মানব ভ্রুণ হাসপাতাল ক্যাম্পাসের পশ্চিম পাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপের মাঝে দেখতে পান। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলে তারা ভ্রুণগুলো উদ্ধারের পাশাপাশি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেন। রাতেই হাসপাতাল প্রশাসন খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ওইগুলো হাসপাতালের গাইনি বিভাগ থেকে ফেলা হয়েছে।

পরে হাসপাতাল পরিচালক জানান, অপরিণত শিশু বা ফিটাসগুলো মূলত গাইনি বিভাগে সংরক্ষণ করে রাখা ছিলো। যা মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে আসতো। এগুলো মেডিকেল কলেজেও হাসপাতালের মতো একইভাবে সংরক্ষিত থাকে।

দীর্ঘ ২০ থেকে ২৫ বছর আগে থেকে এগুলো সংরক্ষণ করায় এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। ফলে ফিটাসগুলো বাতিল হিসেবে গণ্য হওয়ায় তা নির্ধারিত প্রকৃয়ার মাধ্যমে সমাধিত করা উচিত ছিলো। কিন্তু এভাবে ময়লার স্তূপের মধ্যে উম্মুক্তভাবে ফেলার কোনো নির্দেশনা যেমন নেই, তেমনি উচিতও হয়নি।  

এদিকে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, রাতেই ৩১টি অপরিণত শিশুর (ফিটাস) মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য শেবাচিম হাসপাতালের মর্গেই রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এগুলোর ময়নাতদন্ত করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯
এমএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।