বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) এই কনসার্টে হাজারো তরুণের কণ্ঠে বারবার উচ্চারিত 'জয় বাংলা' স্লোগানে কেঁপে উঠলো আরো একবার।
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ ভাষণে সমগ্র স্টেডিয়ামে রাজ্যের উন্মাদনা ছড়িয়ে দিল মুক্তির চেতনায় উদ্ভাসিত লাখো জনতা।
সিআরআই-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলার আয়োজনে ৭ মার্চ বিকাল সোয়া ৩টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় এ কনসার্ট।
এবার কনসার্টে গান পরিবেশ করে চিরকুট, আর্বোভাইরাস, লালন, ক্রিপটিক ফেইট, নেমেসিস, শূন্য, বে অব বেঙ্গলসহ জনপ্রিয় ৯টি ব্যান্ডদল।
নিজস্ব গানের পাশাপাশি সুরের এই আসরে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানও পরিবেশন করেন ব্যান্ডের শিল্পীরা। তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য তুলে ধরে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা জাগানো গানগুলোর সঙ্গে নিজেদের গানও পরিবেশন করে তারা।
আসরের শুরুতেই মঞ্চে আসে বে অব বেঙ্গল। নিজেদের গান ছাড়াও দেশাত্ববোধক গান গেয়ে শ্রোতাদের উজ্জীবিত করে দলটি। এরপর মঞ্চে আসে শূন্য ব্যান্ড।
স্বাধীন বাংলা বেতারের গান ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ দিয়েই নিজেদের পরিবেশনা শুরু করে তারা। তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে হাজার কণ্ঠ গেয়ে ওঠে জয় বাংলা বাংলার জয়। এরপর এই দল পরিবেশন করে 'তোমার হাসি শ্রবণ হলে' ও 'শোন মহাজন', ‘শোন মহাজন, শত আশাদ’, ‘মন তোরে পারলাম না বোঝাইতে’ ইত্যাদি।
লালন ব্যান্ড গেয়ে শোনায় ‘মালকা বানুর দেশেতে আগুন লাগে মনেতে’, 'সময় গেলে সাধন হবে না'। এরপর তারা পরিবেশন করে 'শেখ মুজিবের মুক্তি চাই, মুক্তি চাই। তাদের সঙ্গে কণ্ঠ মেলায় স্টেডিয়ামভর্তি দর্শক শ্রোতারা। ‘মাগো এখনই সময়’ দেশত্মোবধক গান দিয়ে পরিবেশনা শেষ করে তারা।
এ সময় কনসার্টে উপস্থিত হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ রেহানা, তার ছেলে ও সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। হাজারো তারুণ্যের সঙ্গে বাঁধভাঙা আনন্দে মেতে উঠেন তারা।
বিকেল ও সন্ধ্যার নামাজের বিরতির ফাঁকে মঞ্চ মাতায় দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্বোভাইরাস। দেশত্মোবোধক গান ‘ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা’ গেয়ে দর্শকদের আবগাপ্লুত করে রাখে এই ব্যান্ডটি। তাদের গান ‘হারিয়ে যাও তুমি’ গাওয়ার সময় সারা স্টেডিয়ামে ছড়িয়ে থাকা দর্শকেরা মোবাইলের আলো জ্বেলে স্বাগত জানায় ব্যান্ড দলটিকে।
শেষে ব্যান্ড দলটির ড্রামের তালে তালে হাজারো কণ্ঠ গেয়ে ওঠে ‘আয় আয় বন্ধুরা ফিরে আয়’। সন্ধ্যা ৭টায় দেখানো হয় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, যা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শোনে স্টেডিয়াম ভর্তি দর্শক-শ্রোতারা।
এরপর পারফর্ম করে ক্রিপটিক ফেইট। সুরের মূর্চ্ছনায় শ্রোতাদের মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেয় নেমেসিস ও আর্টসেল। সবশেষে ছিলো চিরকুট ব্যান্ডের পরিবেশনা।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্রাফিক্যাল রিপ্রেজেন্টেশন করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা হয় আগামী প্রজন্মকে। আর আয়োজক সংস্থা জানায়, চতুর্থবারের মতো এই আয়োজনে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক দর্শক-শ্রোতা অনুষ্ঠান উপভোগ করে।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৯
এইচএমএস/এমএ