ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সহায়তা চেয়ে বাইক ছিনতাই!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৯
সহায়তা চেয়ে বাইক ছিনতাই! মোটরসাইকেল ছিনতাইচক্রের সদস্যরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সড়কের নির্জন স্থানে মোটরসাইকেল আরোহীকে দেখে থামার ইশারা দেন অল্পবয়সী কোনো যুবক। আর তখন আরোহী মোটরসাইকেল থামালে বিপদে পড়েছেন জানিয়ে তার কাছে সহায়তা চান তিনি। 

বিনয়ী আবদারে মোটরসাইকেল আরোহী অজ্ঞাত ওই যুবককে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে রাজিও হয়ে যান অনেক সময়। এদিকে যুবকের কথা অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দিতে গেলেই বাঁধে বিপত্তি।

আগে থেকেই সেখানে ওৎ পেতে থাকা কয়েকজন মিলে আরোহীকে মারধর করে টাকা-মোবাইলসহ ছিনিয়ে নেয় মোটরসাইকেল।

বিপদের কথা বলে আরোহীর কাছে সহায়তা চাওয়া সেই যুবক আসলে ছিনতাইকারী চক্রের একজন সদস্য। গন্তব্য চাওয়া এবং নির্ধারিত স্থানে যাওয়ার পর মারধর করে সব লুট করে নেয়ার সবই তাদের পূর্ব পরিকল্পনারই অংশ।  

দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর আশে-পাশের এলাকায় অভিনব পন্থায় মোটরসাইকেল ছিনতাইকারী এই চক্রটিকে অবশেষে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশান ব্যটালিয়ন (র‌্যাব-১)।

বৃহস্পতিবার (০৭ মার্চ) সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) টঙ্গী পূর্ব থানার ঝিনুক মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাব-১।  

এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা একটি মোটরসাইকেলও উদ্ধার করা হয়। আটকরা হলেন- মাহিদুল ইসলাম ওরফে মাহি (১৯), আশিক মিয়া (২২) ও সাদেক মিয়া (১৮)।

র‌্যাব-১ এর স্কোয়াড কমান্ডার (সিপিসি-২) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সালাউদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, গত ২ মার্চ টঙ্গী এলাকায় সামাদ নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী এ চক্রের হাতে মোটরসাইকেল খোয়ান। ঘটনার দিন বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে সামাদ টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় পৌঁছালে ২০ বছর বয়সী এক অজ্ঞাতনামা যুবক তার কাছে হাত উঠিয়ে সহায়তা চায়। ভিকটিম সরল বিশ্বাসে ওই যুবককে নিয়ে টঙ্গী বিসিক এলাকায় গেলে ৫-৬ জন তাকে ঘিরে ধরে। এরপর মারধর করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভিকটিমের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন কার্ড, মোবাইলসহ মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি র‌্যাবের নজরে এলে ছায়াতদন্ত শুরু করে, যার সূত্র ধরে এই তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চক্রের কমবয়সী কোনো যুবক ফাঁকা ও নির্জন স্থানে অপেক্ষা করতে থাকে। রাস্তায় কোনো মোটরসাইকেল আসতে দেখলে সে হাত উঁচিয়ে সহযোগিতা চায়। আরোহী গন্তব্যে পৌঁছে দিলে নির্জন কোনো স্থানে নিয়ে যায়; যেখানে আগে থেকে চক্রের অন্য সদস্যরা ওৎ পেতে থাকে। তারা মোটরসাইকেল আরোহীর গতিরোধ করে মারধর করে মোটরসাইকেলসহ সবকিছু ছিনিয়ে নেয়।
 
আটক মাহিদুল ইসলামের বন্ধু সোহেল ওরফে বোমা সোহেল এই চক্রের মূলহোতা। সোহেল কোনো ভিকটিমকে ফাঁদে ফেলে মাহিদুলকে ফোন দেয় এবং মাহিদুলের নির্দেশনা অনুযায়ী ভিকটিমকে নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যায় সোহেল। আটক আশিক ভিকটিমকে আনার পর মারধর করতো এবং মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের পর তা চালিয়ে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করতো সাদেক মিয়া।

মূলহোতা সোহেল পলাতক রয়েছেন, তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান এএসপি সালাউদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১১ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৯
পিএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।