বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হাশেমের সভাপতিত্বে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াৎ।
এ সময় বক্তারা বলেন, আমরা মেয়র, মন্ত্রী বা কমিশনার হতে চাইছি না।
লিখিত বক্তব্যে সেকেন্দার হায়াৎ বলেন, নগরীর ৯৫ ভাগ মানুষ কেনা-কাটার জন্য কমবেশি ফুটপাতের ওপর নির্ভরশীল। এদের অধিকাংশই বিত্তহীন শ্রমজীবী বা নিম্নবিত্তের মানুষ। যাদের ফুটপাত ছাড়া অন্য কোথাও কেনাকাটা করতে যাওয়ার উপায় নেই। কমপক্ষে ৪ লাখ হকার ফুটপাতের ওপর নির্ভর করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু নগরীর হকাররা সবসময় বিভিন্ন হয়রানি, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির শিকার হয়।
তিনি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ শুরু হলে হকারদের ফুটপাত ছেড়ে দিতে বলে। এ সময় প্রশাসন আশ্বস্ত করে যে, পুলিশ সপ্তাহ শেষ হলে হকাররা আবারও ফুটপাতে ব্যবসা করতে পারবে। কিন্তু ইতিমধ্যে ৪৯ দিন অতিবাহিত এবং পুলিশ সপ্তাহ শেষ হলেও হকারদের প্রশাসন ফুটপাতে দাঁড়াতে দিচ্ছে না। দীর্ঘ এই সময় কোনো রোজগার না থাকায় হকাররা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
সেকেন্দার হায়াৎ আরো বলেন, হকার উচ্ছেদের জন্য প্রায়শই যে কথা বলা হয় তা হলো হকাররা নগরীর যানযটের প্রধান কারণ। কিন্তু ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এক গবেষণায় দেখা গেছে নগরীর যানযটের প্রধান কারণ প্রাইভেট কার দিয়ে রাস্তা দখল, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং এবং দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা।
হকারদের পুনর্বাসনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের তাণ্ডবে হকারদের মালামাল ভস্মীভূত হলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক হকারকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থ সহযোগিতা করে নতুন করে ব্যবসা শুরু করতে বলেন। এছাড়া তখন তিনি হকারদের পুনর্বাসন ছাড়া হকারদের উচ্ছেদ করা হবে না বলেও জানিয়েছিলেন। আর ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল একনেকের সভায় সিটি কর্পোরেশনকে হকারদের পুনর্বাসনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এ সময় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হলো- পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ চলবে না; হকারদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই; চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; হকারদের ওপর দমন-পীড়ন-নির্যাতন বন্ধ করতে হবে; প্রকৃত হকারদের তালিকাভুক্তি করণসহ আইডি কার্ড দিতে হবে; দখলকৃত সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করে হকারদের পুনর্বাসন করতে হবে; হকারদের ট্র্যাক্সের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; হকারদের পুনর্বাসনের জন্য ৫ বছর মেয়াদী মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে; জাতীয় বাজেটে হকার্স পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দ দিতে হবে এবং হকার ব্যবস্থাপনায় জাতীয় নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের অংশ হিসেবে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান ও সুধি সমাবেশ, প্রতীকী অনশন এবং ১৮ এপ্রিল সিটি কর্পোরেশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৯
এইচএমএস/এমজেএফ