মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ভারতীয় হাইকমিশনে আয়োজতি এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার প্রতিবছর মুক্তিযোদ্ধা উত্তরাধিকারীদের বৃত্তি দিয়ে আসছে।
বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের জিওসি-ইন-সি লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নারাভানে। বক্তব্য রাখেন ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ।
এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ বৃত্তি গ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যুদ্ধ করেছেন। তারা দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এই বৃত্তি তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে ভারত সরকারের একটি ছোট প্রয়াস। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে শিক্ষার্থীরা ধারণ করবে বলেই প্রত্যাশা।
ভারতীয় হাইকমিশন জানান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য দু’টি প্রকল্প একযোগে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৯৫৭ জন শিক্ষার্থীকে মোট ২৩ দশমিক ৬৬ কোটি টাকা বৃত্তি দেওয়া হয়েছে।
২০০৬ সালে ভারত সরকার মুক্তিযোদ্ধা উত্তরাধিকারীদের জন্য ‘মুক্তিযোদ্ধা বৃত্তি প্রকল্প’ চালু করে। পুরনো প্রকল্পের অধীনে, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ১১ হাজার ৩৩৬ জন শিক্ষার্থী উপকৃত হয়েছেন এবং এ উদ্দেশ্যে ১৭ দশমিক ৪২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘নতুন ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বৃত্তি প্রকল্প’ ঘোষণা করেন। নতুন বৃত্তি প্রকল্পের অধীনে পরবর্তী পাঁচ বছরে ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা উত্তরাধিকারীকে ৩৫ কোটি টাকা দেওয়া হবে। প্রতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে এক হাজার করে মোট দুই হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এককালীন ২০ হাজার টাকা এবং স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এককালীন ৫০ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে ২০১৮ সাল থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
এবছর ২ হাজার ২শ জন শিক্ষার্থী নতুন ও পুরনো প্রকল্পের অধীনে বৃত্তি লাভের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের সব জায়গা থেকে শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে ব্যাপক সহযোগিতা করেছে। এ বছর থেকে ডিজিটাল ইন্ডিয়া উদ্যোগের সঙ্গে ডিরেক্ট ব্যাংক ট্রান্সফার (ডিবিটি) পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বৃত্তির টাকা সরাসরি জমা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৯
টিআর/এএ