বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় মাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভক্তদের ইবাদত বন্দেগী, জিকির, প্রার্থনা, গান-বাজনায় মুখরিত মাজার ও এর আশপাশের এলাকা।
তিনদিন ব্যাপী এ মেলাকে ঘিরে উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে এলাকা।
মাজার গেট, দীঘির চারপাশ মিলিয়ে ছোট বড় ৫০০ ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা বিভিন্ন খাবার, খেলনা ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। মেলায় আসা ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার পাশপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে।
চট্টগ্রাম থেকে মেলায় আসা জহির উদ্দিন আকুল বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর মেলায় আসি। এ মেলায় এসে ইবাদত বন্দেগী করি। মেলায় আসলে খুবই ভালো লাগে।
৩০ বছর ধরে নিয়মিত মেলায় আসা কুষ্টিয়ার ছত্তার আলী বাংলানিউজকে বলেন, লালন ও খানজাহান আলীকে ঘিরে আমার জীবন। বিগত ৩০ বছর ধরে এ মেলায় আসি। মেলায় এসে পীরের রওজা জিয়ারত করে চলে যাই। বাকি সময় লালনের আখড়ায় কাটাই।
স্থানীয় অঞ্জলি দাস বাংলানিউজকে বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবারই এ মেলায়। খানজাহান আলী (রহ.) মাজারে আমরা আসি খুব ভালো লাগে। মেলার সময় আমাদের অনেক আত্মীয়-স্বজনরাও আসে এখানে।
ভ্রাম্যমাণ মিষ্টি ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন বলেন, দেশের যেসব জায়গায় বড় ধরনের মেলা হয়, সেসব জায়গায় আমরা দোকান নিয়ে যাই। মেলা উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিকেলে আমরা এখানে এসেছি। এখানে প্রচুর লোক আসছে। ভালো বেচাকিনি হচ্ছে।
৬০০ বছর ধরে বাগেরহাটের আধ্যাত্মিক পীর ধর্মীয় নেতা খানজাহান আলী (রহ.)-এর মাজার ও খানহাজান আলী দীঘির চারপাশে প্রতি বছরের চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে তিনদিন ব্যাপী মেলা হয়। মেলা উপলক্ষে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশ-বিদেশ থেকে লাখ লাখ ভক্ত এখানে আসে। বুধবার (২০ মার্চ) ফজরের নামাজ শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা শুরু হয়েছে। শেষ হবে ২২ মার্চ (শুক্রবার) রাতে।
মাজারের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির বাংলানিউজকে বলেন, ছোট বেলা থেকে দেখছি আমাদের বারা-দাদারা প্রতি বছর চৈত্র মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এ মেলা বসাতো। মেলায় খানজাহান আলীর লাখ লাখ ভক্ত তার মনোবাসনা নিয়ে হাজির হন। তারা বিশ্বাস করেন খানজাহান আলী এখানে কাউকে খালি হাতে ফিরান না। খানজাহান আলী অছিলায় আল্লাহ তাদের সব আশা পূরণ করেন। তাই সব ধর্মের মানুষ এ সময়ে হযরত খানজাহান আলীর মাজারে মিলিত হন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) তপন কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো মেলায় পর্যাপ্ত ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ভক্তদের নিরাপত্তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৯
জিপি