`উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে কেউ সংসদ নির্বাচন করে যাবেন সেটি ভুলে যান’- বলে হারুনুর রশীদের দেওয়া সেই বক্তব্যের জবাবে মন্ত্রী বলেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বহু অভিযোগ করে এলেও একটি প্রমাণও দিতে পারেনি। সেখানে পুলিশ সুপার সরকারি কর্মকর্তা হয়ে এমন মন্তব্য করতে পারেন না।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও ১৪১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ভাতা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী।
গত ১০ মার্চ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এসপি হারুন অর রশিদ বলেছিলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে কেউ সংসদ নির্বাচন করে যাবেন সেটি ভুলে যান। এ নির্বাচনকে ঘিরে কোনো প্রকার অরাজকতা, কারচুপি হতে দেওয়া হবে না। জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। এর জন্য আমাদের যা যা করণীয় আমরা তা করবো। নির্বাচনের সময় এমপি-মন্ত্রীরা নিজ এলাকায় অবস্থান করবেন না, সেটি তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। ’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘নৌপথে দৈনিক লাখ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে। এই চাঁদাবাজি রোধ করার জন্য এক মন্ত্রীর সঙ্গে আমার ঝগড়া করতে হয়েছে। ’
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, বিআইডব্লিউটিএ’র টেন্ডার না হওয়ায় তাদের নিজেদের (সরকারি) লোকজন খাস কালেকশন করছিলো। তখন পুলিশ সরকারি লোকদের গ্রেফতার করলে সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে প্রশ্ন করা হলে আমি এসপিকে জিজ্ঞেস করি খাস টোল আদায়ের সময় সরকারি লোক ধরেছেন কেন? এগুলো আমাদের লোক ছিল না। সরকারি লোকেরাই সরকারি লোক ধরেছিল। আওয়ামী লীগের বা আমাদের কোনো লোক চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলো না, আমরা চাঁদাবাজি প্রশ্রয় দেইনি। পুলিশ সুপার এমন বক্তব্য দিয়ে থাকলে ঠিক করেনি। আমার সঙ্গে তার কোনো ঝগড়া হয়নি। এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
গণমাধ্যমকর্মীদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্সি বা পদমর্যাদা অনুসারে মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে একজন পুলিশ সুপার কোনো ফোরামে ঢালাওভাবে মন্তব্য করতে পারেন না।
হারুনের ওই বক্তব্যের পর সেই সভায়ই বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থিত অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, এসপি হারুন তার বক্তব্যে হঠাৎ করে বলেন, তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করেছেন। এটা কী করে হয়, একজন সরকারি কর্মকর্তার মাধ্যমে। একইসঙ্গে তিনি প্রকাশ্যে এটা বলতে পারেন না। মন্ত্রীকে এখানে হেয় করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৯
এইচএ/