ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘হাওরে দুর্নীতি হচ্ছে রাজনৈতিক যোগসাজশে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৯
‘হাওরে দুর্নীতি হচ্ছে রাজনৈতিক যোগসাজশে’

ঢাকা: হাওরের বিভিন্ন প্রকল্পে রাজনৈতিক যোগসাজশে দুর্নীতি হয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও গবেষক ড. আবুল বারকাত। 

তিনি বলেছেন, হাওরে বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের ক্ষেত্রে ঠিকাদারি আর পিআইসি (প্রকল্পের জন্য একটি করে বাস্তবায়ন কমিটি)- এই দুই অ্যাপ্রোচে দুর্নীতি হয়। ঠিকাদারি পদ্ধতিতে ঠিকাদার আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা মিলে দুনীতি করেন।

আর পিআইসি পদ্ধতিতে দুর্নীতি করেন স্থানীয় জণপ্রতিনিধি আর পিআইসির রাজনৈতিক যোগাযোগ থাকা সদস্যরা।
 
শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম কনফারেন্স হলে ‘হাওরের সুশাসন ব্যবস্থা ও হাওরবাসীর অধিকার’ শীর্ষক এক সেমিনারে ড. বারকাত এসব কথা বলেন।
অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম এ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের করা (এএলআরডি) ‘হাওর অঞ্চলের বাধঁ ব্যবস্থপনা, হাওরবাসীর জীবন প্রণালী ও অধিকার’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন তিনি।  

ড. বারকাত বলেন, ২০১৭ সালে ঠিকাদার ও পাউবোর কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তাদের অর্থ আত্মসাৎ ও অবহেলার কারণেই হাওর অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় কৃষকের ও জনসাধারণের আর্থিক ক্ষতি হয়।
 
তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতির অপব্যবহার ও ইজারা ব্যবস্থায় সরাসরি প্রকৃত জেলেদের বঞ্চিত করা হয়। হাওরের দখল পাইয়ে দেয় ইজারাদারকে যাদের সঙ্গে আবার যোগাসাজশ থাকে স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের। এভাবে ব্যবস্থাগতভাবে হাওরের দারিদ্র্য ও প্রান্তিক জেলে হাওরের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারায়।
 
সুপারিশ তুলে ধরে এই গবেষক বলেন, বছরের বিশেষ বিশেষ সময় যখন গরিব হাওরবাসী চাষি ও জেলেরা বেকার থাকে তখন খোলা বাজারের ব্যবস্থা করতে হবে। যেখান থেকে তারা ভতুর্কি দামে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদ্রি কিনতে পারবে।
 
গরিব হাওরবাসীর সহজ শর্তে ঋণ দেয়ারও সুপারিশ করেন তিনি। ড. আবুল বারকাত বলেন, বিভিন্ন এনজিও যাতে কমিউনিটিগুলোকে ঋণ দেয়ার সময় চড়া হারে সুদ নিতে না পারে সেজন্যও নজরদারি বাড়ানো দরকার। হাওরের গরিব কৃষককে বিনামূল্যে বীজ, সার, যন্ত্রপাতি দেয়ারও পরামর্শ দেন তিনি।
 
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংস করে হাওরে কিছু করা যাবে না। তাই হাওরকে জীববৈচিত্র্যের আধার হিসেবে ধরে নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। হাওর থেকে অর্থনৈতিক লাভ খুঁজতে গেলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে।
 
অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার কাসমির রেজা, ভাসান পানি আন্দোলনের নেতা নির্মল ভট্টাচার্য প্রমুখ বক্তব্য দেন। আর সূচনা বক্তব্য দেন এএলআরডি-এর  নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা।
 
বাংলাদেশ সময়:  ১৩০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৯
এমএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।