ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সিটি কর্পোরেশন মানেই ভোগান্তি-অনিয়ম!

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
সিটি কর্পোরেশন মানেই ভোগান্তি-অনিয়ম!

ঢাকা: দেশের ৮ সিটি কর্পোরেশনে একটানা অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার অভিযান শেষে দুদক বলছে, নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ, নবায়ন, জন্ম নিবন্ধন সনদসহ বিভিন্ন সেবাপ্রাপ্তি মানেই ঘুষ লেনদেন। আর সিটি কর্পোরেশন মানেই ভোগান্তি আর অনিয়ম!

দুদকের উপপরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্যর দেওয়া তথ্য মতে, নানা অনিয়ম ও অপকর্মের অভিযোগে দেশের ৮ সিটি কর্পোরেশন অফিসে একযোগে আকস্মিক অভিযান চালানো  হয়। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন যাবত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (১০৬) ট্রেড লাইসেন্স সেবায় হয়রানির অভিযোগ এলে কমিশন অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়।  

পরে বুধবার (১০ এপ্রিল) একযোগে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, রংপুর সিটি কর্পোরেশনে একযোগে অভিযান চালানো হয়।

দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের তত্ত্বাবধানে দুদক প্রধান কার্যালয়, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে অভিযানকালে দেখা যায়, রাজস্ব বিভাগের কর অঞ্চল-১ এর অফিস সহায়ক মোহাম্মদ আলী গ্রাহকের কাছে ট্রেড লাইসেন্সের নির্ধারিত ফি ৪ হাজার ৫০০ টাকার স্থলে ১৫ হাজার টাকা দাবি করলে দুদক টিম তাকে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট সোপর্দ করে।

এই অভিযোগ আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে প্রক্রিয়া শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।  

অভিযানকালে আসা সেবাপ্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে জানা যায় যে, ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার সঙ্গে বহিরাগত একটি দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে, যারা নগর ভবনের পেছনের গেট সংলগ্ন কয়েকটি ফটোকপির দোকানকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম পরিচালনা করে।  

দালাল নির্মূলে দুদক টিমের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষকে বেশকিছু সুপারিশ দেওয়া হয়।  

অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে গিয়ে দেখা যায়, অফিসের মধ্যে বহিরাগত কিছু লোক চেয়ার-টেবিল নিয়ে অফিস করছেন, যারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন। এ ব্যাপারে রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হলে তিনি ওই ঘটনার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এবং ব্যাপারটি তার জানা নেই বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দুদক টিম তাকে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে একটি রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছে।

চট্টগ্রাম ও কুমিল্ল সিটি কর্পোরেশনে অভিযানকালে দেখা যায় ট্রেড লাইসেন্সের ফি বাবদ গৃহীত অর্থের কোনো রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা সংগৃহীত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার কোনো রেকর্ড টিমকে তাৎক্ষণিকভাবে দেখাতে ব্যর্থ হন। তারা এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র একত্র করে দুদক অফিসে পাঠাবেন বলে অঙ্গীকার করেন।  

এছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনে অভিযানকালে বেশকিছু অসঙ্গতি দুদক এনফর্সমেন্ট টিমের কাছে ধরা পড়ে।  

অভিযানকালে দুদক টিম ট্রেড লাইসেন্স প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করে সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করলে অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পায়। এসব অভিযোগের ব্যাপারে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রতিবেদনসমূহ কমিশনে উপস্থাপন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
আরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।