রোববার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকার সংবাদমাধ্যমকে নুসরাত হুমায়রা বলেন, ‘বাবা বেঁচে আছেন। বাবার পাশেই আমি বসে আছি।
হুমায়রার বক্তব্যের পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সংবাদের ওপর ভিত্তি করে বিএনপি’র পক্ষ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি শোকবার্তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। কিন্তু পরবর্তীতে জানা যায় যে, মাহফুজ উল্লাহ মৃত্যুবরণ করেননি, তবে তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য বিএনপি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। দোয়া করি-মহান রাব্বুল আলামীন যেন মাহফুজ উল্লাহকে দ্রুত সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু দান করেন। ’
এর আগে বিকেলে ছড়িয়েছিল মাহফুজ উল্লাহর মৃত্যুর খবর। তখন সাংবাদিক নেতা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মাহফুজ উল্লাহর বড় মেয়ে অঙ্গনা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন’।
তখন বিএনপি নেতা ও ড্যাবের সাবেক মহাসচিব এ জেড এম জাহিদ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে মাহফুজ উল্লাহর লাইফ সাপোর্ট খুলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তবে পরে বিষয়টি নিয়ে তিনি জানান, ‘উনার লাইফ সাপোর্ট অফ করা হয়েছে, তবে হদস্পন্দন আছে। উনার মৃত্যুর ঘোষণা দেননি চিকিৎসকরা। ’
হৃদরোগ, কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপজনিত নানা রোগে ভুগছেন মাহফুজ উল্লাহ। গত ১০ এপ্রিল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ব্যাংককের ওই হাসপাতালে নেওয়া হয়।
১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালীতে জন্ম নেওয়া মাহফুজ উল্লাহ বাংলাদেশের প্রতিটি অধিকার আদায়ের আন্দোলনের একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী। ছাত্রাবস্থায়ই সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন তিনি।
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রাসহ দেশের বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন। মাঝে চীন গণপ্রজাতন্ত্রে বিশেষজ্ঞ, কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে, কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগেও খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন সিনিয়র এই সাংবাদিক।
সেন্টার ফর সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল মাহফুজ উল্লাহ বাংলাদেশে পরিবেশ সাংবাদিকতার সূচনা করেন। রাজনীতি উন্নয়ন ও পরিবেশ বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা তার বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর করজারভেশন অব নেচারের একজন নির্বাচিত সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত হন।
মাহফুজ উল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর করেন। তার বাবা শিক্ষাবিদ মরহুম হাবিবুল্লাহ ও মাতা মরহুমা ফয়জুননিসা বেগম। তৎকালীন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কমরেড মোজাফফর আহমদের নাতি সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৯/আপডেট ১৯৪০ ঘণ্টা
এমএইচ/এমএ/এইচএ/