ঢাকা, সোমবার, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৩ মার্চ ২০২৫, ০২ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, হাওরে পানি বাড়ছে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, হাওরে পানি বাড়ছে

মৌলভীবাজার: টানা চতুর্থ দিনের মতো মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। কুশিয়ারা, মনু ও ধলাই নদীর পানি বাড়ার ফলে নতুন করে গ্রামাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পর এবার বাড়ছে হাওরের পানি। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে হাওরপাড় ও তার আশপাশের এলাকা। ইতিমধ্যে জেলার ৬টি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার শতাধিক গ্রামে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। 

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সাড়ে ৫টা) পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, মনুর পানি চাঁদনীঘাট ব্রিজ এলাকায় বিপদসীমার ৯৯ সে. মি. উপর দিয়ে ও মনু রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় বিপদসীমার ৫ সে. মি. নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই বিপদসীমার ১৯ সে. মি. নিচে ও কুশিয়ারা বিপদসীমার ৫৬ সে. মি. উপরে প্রবাহিত হচ্ছে।

উজানে মনু ও ধলাইর পানি কমতে থাকলেও নিম্নাঞ্চলে সে পানি বাড়ছে।

এদিকে নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে জেলার হাওরগুলোরও পানি বেড়েছে। এরই মধ্যে হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার কিছু এলাকায় হাওর পাড়ে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে।

জানা যায়, সদর উপজেলার মনুমুখ, আখাইলকুরা, চাঁদনীঘাট (আংশিক), একাটুনা (আংশিক) ও খলিলপুর ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। মৌলভীবাজার পৌরসভার সৈয়ারপুর এলাকায়ও শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছেন। রাজনগর উপজেলা ফতেহপুর, উত্তরভাগ ও কামারচাক ইউনিয়ন। কমলগঞ্জ উপজেলার ৯টির মধ্যে সবগুলো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল, বরমচাল (আংশিক) টিলাগাঁও ও হাজিপুর।  

এদিকে জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে প্লাবন দেখা দিয়েছে। এছাড়া বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়ন ও দাসেরবাজার ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। তবে জুড়ী ও বড়লেখার পরিস্থিতিকে বন্যা বলতে নারাজ উপজেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সারা জেলায় ৫৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। তবে বেসরকারি হিসেবে এর পরিমাণ লক্ষাধিক। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার সবক’টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। এদিকে প্রথম ধাপে চারটি উপজেলায় ২২ মে টন চাল ও হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দিলেও তা বাড়ানো হয়েছে। বন্যার তৃতীয় দিনে চারটি উপজেলায় ২শ’ ৩৬ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যার স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় ৭৪টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে পুরো জেলায়। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।

মৌলভীবাজার সদর, বড়লেখা, জুড়ী, কমলগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্যা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের বরাদ্দকরা ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে শুকনা খাবার বিতরণও করা হয়।  

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বাংলানিউজকে বলে, বন্যা কবলিত প্রত্যেক উপজেলায় বরাদ্দ আগের থেকে বাড়ানো হয়েছে। কোথাও কোনো ত্রাণের অভাব নেই। তারপরও কোনো ত্রাণের নতুন চাহিদা হলে তাৎক্ষণিক দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।