আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেলে বেবি হোমের উপ-তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ ফাতেমাকে নতুন অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করেন।
জানা যায়, আদালতের কাছে ফাতেমার অভিভাবক হওয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন ঝালকাঠির বাসিন্দা ও বরিশালের একটি কলেজের ইসলামী ইতিহাসের প্রভাষক মু. নুরনবী সিদ্দিকী ও রেহানা আক্তার দম্পতি।
এ আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বুধবার (১৭ জুলাই) বরিশাল শিশু আদালতের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ এক লাখ টাকা বন্ডে শিশুকন্যা ফাতেমাকে ওই দম্পতির কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) শিশুটিকে হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আদালতে আবেদনের প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে তদন্ত করা হয়। সে তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আইনানুগ অভিভাবক হিসেবে প্রভাষক মু. নুরনবী সিদ্দিকী ও রেহানা আক্তার দম্পতির কাছে ফাতেমাকে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বেবী হোমের উপ-তত্ত্ববধায়ক আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে জানান, গত ১৪ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলা সদরের কমলাপুর এলাকায় প্রসব বেদনায় ছটফট করা মানসিক ভারসাম্যহীন এক অন্তঃস্বত্ত্বা নারীকে পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান। ওই দিন সন্ধ্যায় কন্যা সন্তান জন্ম দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান ওই প্রসূতি। অনেক খুঁজেও শিশুটির মাকে না পেয়ে অভিভাবকের দায়িত্ব নেন ওসি।
হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত ২৭ জানুয়ারি শিশুটিকে পটুয়াখালী সমাজসেবা অধিদফতরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ‘মাতৃ-পিতৃহীন’ এ নবজাতকের পরিচয় নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান তার মৃত মায়ের নামে শিশুটির নাম রাখেন ফাতেমা রহমান।
পরে, পটুয়াখালী জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের হিসাব সহকারী সিদ্দিকুর রহমান ও হাসপাতালের একজন নার্স আনুষ্ঠানিকভাবে শিশু ফাতেমাকে আগৈলঝাড়ায় বিভাগীয় বেবী হোমে হস্তান্তর করেন। এরপর থেকে বেবী হোমেই বড় হতে থাকে সে। অবশেষে, প্রভাষক দম্পতি তাকে লালন-পালনের জন্য নেওয়ায় এতদিন পর বাবা-মায়ের পরিচয় পাবে শিশুটি।
এদিকে, ফাতেমাকে কোরআনে হাফেজ বানানোর ইচ্ছা আছে বলে জানিয়েছেন দত্তক নেওয়া ‘নিঃসন্তান’ ওই দম্পতি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৯
এমএস/একে