ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

‘সব পলিথিন কারখানা বন্ধ করা সম্ভব নয়’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
‘সব পলিথিন কারখানা বন্ধ করা সম্ভব নয়’ মতবিনিময় সভায় বনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: পরিবেশ সুরক্ষায় সরকার পলিথিন বন্ধে কাজ করছে। তবে এর উৎপাদন বন্ধে সব কারখানা বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তবে, যেসব পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, সেগুলো উৎপাদন করা যাবে বলেও জানান তিনি।
 

বুধবার (৩১ জুলাই) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।

বনমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে গত ছয় মাসে পরিবেশ অধিদফতর ১২২টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১২৬ টন পলিথিন জব্দ ও ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে।

ঢাকা শহরের চারপাশের ৬৫ ভাগ ইটভাটা যুগোপযোগী করা হয়েছে, যাতে বায়ুদূষণ না হয়।  

তিনি বলেন, আমরা বায়ুদূষণ রোধে পরিকল্পনা নিয়েছি। বায়ুর মান নির্ণয়ে ঢাকাসহ সারাদেশে ১৬টি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বায়ুর মান উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শতকরা ৫৮ ভাগ বায়ুদূষণ হয় ইটভাটার জন্য, বিশেষ করে ঢাকা সিটির আশপাশের ইটভাটার জন্য। এগুলো বন্ধের জন্য পরিকল্পনা ও আইন করা হয়েছে। ৬৫ ভাগ ইটভাটাকে যুগোপযোগী ও আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়েছে।  

তবে, এসময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী জানান, বায়ুদূষণ রোধে কোনো আইন নেই। একটি আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে। সেটি পাস হলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

মো. শাহাব উদ্দিন আরও বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন বন্ধে সারাদেশে আটটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। সব পলিথিন কারখানা বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা পলিথিন নিষিদ্ধ করেছি। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে পলিথিন ব্যবহারের সুযোগ আছে। সব পলিথিনই তো সমস্যা তৈরি করে না। সরকারের নীতিমালার আওতায় যেসব পলিথিন নিষিদ্ধ, সেগুলোর উৎপাদন বন্ধ করে দেবো। যেগুলো তৈরির আইন আছে, সেগুলো তৈরি করতে পারবে। যা নিষিদ্ধ নয়, তা তো বন্ধ করতে পারবো না। তবে পলিথিনের ব্যবহারের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। পাট দিয়ে আমরা বিকল্প ব্যাগ তৈরি করছি। এ পাটের ব্যাগ ব্যবহারে মানুষকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে আগামী ৪ আগস্ট কারওয়ানবাজারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে নিয়ে একটি সচেতনতামূলক সভা করা হবে। পর্যায়ক্রমে আমরা এ ধরনের আরও সভা করবো।

যানবাহনের হাইড্রোলিক হর্ন শব্দদূষণের একটি বড় কারণ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে হাইড্রোলিক হর্ন আইনগতভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারপরও এটা বন্ধ হচ্ছে না। তবে, আমরা চেষ্টা করছি। আসলে, এটি মানুষের মানসিকতারও বিষয়। বাইরের দেশে কেউ হর্ন বাজালে অন্যরা প্রতিবাদ করে। মানুষ সচেতন হলে এটা থাকবে না, শব্দদূষণও কমে যাবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে এখন পর্যন্ত সেখানে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু হয়নি। বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে পরিবেশ ও সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না। সব বুঝেশুনেই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় রাখতে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছে, সেগুলোও আমরা বাস্তবায়নে সক্ষম।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে শাহাব উদ্দিন বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় আগামী বছর সারাদেশে এক কোটি গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এসময় পরিবেশের সুরক্ষায় আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পর পশুর বর্জ্য ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান সচিব আব্দুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯ 
এসকে/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।