বুধবার (৩১ জুলাই) দিনগত মধ্যরাত থেকে হ্রদে মৎস্য আহরণ উন্মুক্ত করা হয়েছে। হ্রদ থেকে আহরণকৃত মাছ বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) থেকে বাজারজাত করা যাবে।
তবে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও এবার খুশি হতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি ছিল এ বছর মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা আরো পনের দিন বাড়ানোর। কিন্তু তাদের এ দাবি গৃহীত না হওয়ায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ যথারীতি তিন মাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া জানান, এ বছর বৃষ্টি দেরিতে শুরু এবং হ্রদের পানি যথা সময়ে না বাড়ায় বেশিরভাগ মাছ ডিম ছাড়েনি, তাই মাছের প্রজননও কম হয়েছে। মাছ শিকার শুরু হলে প্রচুর ডিমওয়ালা মাছ ধরা পড়বে। কর্তৃপক্ষ মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারণে ব্যবসায়ী ও বিএফডিসি (সরকারি রাজস্ব) উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এদিকে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হবে ঈদুল আজহার ছুটি। এসময় সাধারণত মাছের ব্যবসা তেমন একটা হয়না। ঈদ ঘিরে অন্তত ১৫ দিন ব্যবসা মন্দা যায়, তাই ব্যবসায়ীরা লোকসান থেকে বাঁচতেই ঈদের পর মাছের নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার দাবি করেছিলেন।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ১ মে দেশের সর্ববৃহৎ কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিতসহ হ্রদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির সহায়ক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৩ মাসের জন্য হ্রদ থেকে সব ধরনের মৎস্য আহরণ, বাজারজাতকরণ এবং পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) ও রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। এরপর টানা তিন মাস মাছ ধরা থেকে বিরত থাকেন জেলেরা। তবে বন্ধের সময় কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত কার্প ও সিলভার কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়।
এদিকে জেলেরা অভিযোগে বলছেন, কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ নিষেধাজ্ঞার সময় দুই বছর আগে তারা ভিজিএফের চাল পেতেন ৪০-৬০ কেজি করে। তখন দু-মুঠো খেতে হলেও পারতেন। কিন্তু বর্তমানে মাছ ধরা বন্ধের সময় দু’মৌসুম ধরে তারা সরকারি সাহায্যের খাদ্যশস্য না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যে কারণে তিন মাস ধরে তারা আর্থিক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে পার করেছেন। আবার অনেকে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০১ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৯
জেডএস