ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

প্রচলিত নিয়মেই লঞ্চের টিকিট বিক্রি, বসছে না কাউন্টার 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৯
প্রচলিত নিয়মেই লঞ্চের টিকিট বিক্রি, বসছে না কাউন্টার 

ঢাকা: প্রতিবছর ঈদ এলেই সামনে আসে লঞ্চে ঈদযাত্রায় অগ্রিম টিকিট বিক্রি নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিওটিএ) ও লঞ্চ মালিকদের মধ্যে এক ধরনের ‘ঠেলাঠেলি’। ফলে বিভ্রান্তির সম্মুখীন হন যাত্রীরা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

জানা যায়, সারা বছর প্রচলিত নিয়মে লঞ্চগুলোর টিকিট বিক্রি ও চলাচল থাকলেও ঈদ মৌসুমে বিআইডব্লিওটিএ ও ঢাকা নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ চায় নতুন টার্মিনালে (বরিশালগামী লঞ্চের টার্মিনাল) অবস্থিত স্থায়ী টিকিট কাউন্টারে বসে লঞ্চের আগাম টিকিট বিক্রি করুক লঞ্চ কোম্পানিগুলো। তবে প্রতিবছরই তা শুধু কর্তৃপক্ষের ঘোষণাতেই আটকে থাকে; কাউন্টারে আর বসেন না লঞ্চ সংশ্লিষ্টরা।

 

ফলে সবশেষ রোজার ঈদের আগে বিষয়টি নতুন করে ভাবনায় নেয় বিআইডব্লিওটিএ ও ঢাকা নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ। জানানো হয় যেসব লঞ্চের অগ্রিম টিকিট কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে না তাদের কাউন্টারের ইজারা বাতিল ও জরিমানার ব্যবস্থা করা হবে। তবে সেসবেও শেষ পর্যন্ত ‘গুড়ে বালি’। এবারো বসছে না কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট বিক্রির কোনো কার্যক্রম। তাই প্রচলিত নিয়মে লঞ্চের পাটাতনে নিজস্ব ভঙ্গিমায় বিক্রি চলবে ঈদের অগ্রিম টিকিট।

বিআইডব্লিওটিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গেলো কয়েক বছরের মতো এবারো চেষ্টা চালানো হয়েছিল যেন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় যাত্রীরা সবক’টি লঞ্চের টিকিট কাটার সুবিধা পান। সেজন্য নতুন টার্মিনালের নিচতলায় স্থাপিত লঞ্চ কোম্পানিগুলোকে ইজারা দেওয়া টিকিট বুথগুলোতে টিকিট বিক্রির একটি প্রচেষ্টা চালানো হয়। তবে এতে রাজি হয়নি কোনো লঞ্চ কোম্পানিই। তাদের কথামতে, কাউন্টারে বসে থাকা ‘অহেতুক সময় অপচয়’ ছাড়া কিছুই না!  

তাই বেশ কয়েকবার আলোচনা করে এবং আগের পাওয়া অনুরোধের ফলাফলে এবার তাই ‘ক্লান্ত’ বিআইডব্লিওটিএ কর্তারা কাউন্টারে টিকিট বিক্রির চেষ্টা বাদই দিয়েছেন। ফলে লঞ্চ মালিকরা নিজেদের ইচ্ছামতো টিকিট বিক্রি করবে। যদিও সব লঞ্চ কোম্পানিই নিজেদের টিকিটের অন্তত ৩০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করবে বলে বিআইডব্লিওটিএকে ‘নিশ্চিত বার্তা’ দিয়েছে। তবে শেষতক তা কতটা আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে সন্দিহান খোদ বিআইডব্লিওটিএ।  

তবে যাত্রী ও লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শত চেষ্টাতেও সড়কপথ বা রেলপথের মতো নৌ-পথে কাউন্টারে বসে টিকিট বিক্রি সম্ভব নয়। কারণ এখানে টিকিট বিক্রির একটা ‘রেওয়াজ’ গড়ে উঠেছে। যাতে যাত্রী-লঞ্চ কর্মচারী সবাই অভ্যস্ত। যারা এ পথে সব সময় যাত্রা করেন তাদের প্রায় সবাই লঞ্চের কর্মচারীদের পরিচিত। ফলে তারা ফোন করে তারিখ বললেই কেবিন বুকিং হয়ে যায়। আর সাধারণ যারা মাঝেমধ্যে বা ঈদ মৌসুমে লঞ্চ ভ্রমণ করেন তারা অধিকাংশ ডেকে শুয়ে-বসেই যাত্রা করেন।  

কিন্তু ডেকের অগ্রিম টিকিট বিক্রি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর একটি লঞ্চে যা কেবিন থাকে তার ৬০ শতাংশ চলে যায় নিয়মিত যাত্রীদের হাতে। এরপর যা থাকে তা আবার ভিআইপি বা নেতাদের ফোনকলের মাধ্যমে বুকিং করা হয়। তাই ঈদ মৌসুমে চাইলেও ওইভাবে টিকিট বিক্রি সম্ভব হয় না।

জানা যায়, বছর দু’য়েক ধরেই সদরঘাটের নতুন টার্মিনাল নির্মাণের পর সেখানে কিছু টিকিট কাউন্টার বা বুকিং স্টলের ব্যবস্থা করে ঢাকা নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ। এসময় প্রথম বছর এখানে বসে একদিন টিকিট বিক্রিও করে লঞ্চ কোম্পানিগুলো। কিন্তু প্রথম দিনেই বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়ে কাউন্টার ছাড়েন কোম্পানিগুলো। এরপর আর কাউন্টারমুখো হননি তারা।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক (ট্রাফিক) আলমগীর কবীর বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গতকাল (৩০ জুলাই) একটি মিটিং হয়েছে সেখান থেকে একটি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইতোমধ্যে লঞ্চের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।  

তবে কীভাবে বা কোথায় টিকিট বিক্রি হবে সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এই কর্মকর্তা।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৯
কেডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।