গত রোববার (৪ আগস্ট) ও সোমবার (৫ আগস্ট) কলেজ চলাকালে ০১৯৩৪৫০২৯০৪ ও ০১৯৯৯১৩৯৬৬২ নম্বর থেকে ফোন করে ওই শিক্ষকদের এ হুমকি দেওয়া হয়।
যাদের কাছে ফোন করে এই টাকা দাবি করা হয়েছে, তারা হলেন- সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক বলাই চন্দ্র ঘোষ, সহযোগী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, সহযোগী অধ্যাপক নসরুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক জিয়াউর রহমান, সহকারী অধ্যাপক মোছলেহুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মশিউল আজম, প্রভাষক সন্দীপ সানা, প্রভাষক আবু রায়হান, প্রভাষক ইদ্রিস আলী, প্রভাষক মহিতোষ নন্দী, প্রভাষক ধ্রুব কুমার ও প্রভাষক সাধান কুমার সরকার।
এ সংক্রান্ত জিডিতে বলা হয়েছে, শিক্ষকদের কাছে ফোন করে বলা হয়েছে, ‘আপনি অমুক বলছেন?’ উত্তর, ‘জ্বী বলছি!’ ওপ্রান্ত থেকে আবার বলা হয়, ‘আমি সর্বহারা পার্টি এমএল গ্রুপের আঞ্চলিক প্রধান। আপনি আমাদের লিডারের সাথে সালাম দিয়ে কথা বলুন!’ পরে চাঁদা দাবি করে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘টাকা না দিলে ১০ মিনিটের মধ্যে তোর কী হাল হয় দেখে নিস!’ এরপর ওই মোবাইল নম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে, পুলিশ ইতোমধ্যে নম্বর দু’টি কোন নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে, তা খুঁজতে শুরু করেছে।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক বলাই চন্দ্র ঘোষ এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, দু’টি মোবাইল নম্বর থেকে কলেজের ১১ শিক্ষককে হুমকি দিয়ে চাঁদা চেয়েছে সর্বহারা পরিচয়দাতা সন্ত্রাসীরা। ফোন পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে ‘কী হয়েছে’ প্রশ্ন করা হলে জবাবে তারা বলে, ‘কী হয়েছে মানে? কী হবে তাই অনুমান করুন!’ এরপরই তারা স্বর নামিয়ে বলেছে, ‘জানেনতো আমরা সর্বহারা পার্টি করি। এজন্য আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হয় এনকাউন্টারে মেরে ফেলেছে, না হয় অনেককে গুলি করে আহত করেছে। এরকম অনেক নেতা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দিয়ে বাঁচানো দরকার। এজন্য চাই টাকা। কম পক্ষে ৩০ লাখ টাকা এখনই দরকার। আপনি কতটুকু দিতে পারবেন বলুন!’ প্রতিউত্তরে ‘টাকা কেনো দেবো, এতো টাকা পাবোইবা কোথায়?’ বললে জবাবে তারা বলেছে, ‘সময় দিচ্ছি, যেভাবে হোক টাকা যোগাড় করে আমাকে জানাবেন। আমার লোক সেখানে গিয়ে টাকা নিয়ে আসবে। খবরদার চালাকি করার চেষ্টা করলে কিন্তু ফল ভালো হবে না!’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্নজনকে বিভিন্ন ভাষায় তারা আরও বলেছে, টাকা না দিলে ছেলে-মেয়ে অথবা স্ত্রীকে অপহরণ করা হবে’।
অধ্যাপক বলাই চন্দ্র ঘোষ জানান, কলেজ অধ্যক্ষ সাতক্ষীরার বাইরে থাকায় তার সভাপতিত্বে এই হুমকির বিষয়ে শিক্ষকদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক হয়েছে। সেখান থেকে সহকারী অধ্যাপক ওলিউর রহমান ওই নম্বরে ফোন করলে তারা পাল্টা হুমকি দিয়ে বলেছে ‘টাকা দিবি না! দশ মিনিটের মধ্যে দেখিয়ে দিচ্ছি!’ এরপরই ফোন লাইন কেটে দিয়েছে কথিত সর্বহারা পার্টি প্রধান।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানান, বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। তার পরামর্শে জিডি করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, হুমকির ঘটনায় কলেজের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নম্বর দু’টি ট্রেস করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৯
এইচএ/