সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেড় কোটি মানুষের বসবাসের নগরী থেকে কম করে হলেও প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ঢাকা ছাড়বেন। ঈদের ছুটি কাটাতে যাবেন গ্রামে।
মানুষের বাড়ি ফেরা আগে থেকে শুরু হলেও মূলত বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) বিকেল থেকেই বেড়েছে ঘরমুখো মানুষের চাপ। যা চলবে ঈদের আগের দিন রোববার (১১ আগস্ট) পর্যন্ত।
এরই মধ্যে কত মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন তার সঠিক হিসেব সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে পাওয়া যানি। তবে রাস্তাঘাট ঘুরে যা দেখা গেছে তাতে বোঝা যায় রাজধানী এখন অনেকটাই ফাঁকা। কেউ কেউ শনিবার-রোববারও ঢাকা ছাড়বেন। ফলে পুরো এক সপ্তাহ ব্যস্ত এই শহরে কোনো যানজট পোহাতে হবে না রাজধানীবাসীকে।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, চিরচেনা যানজট একেবারেই নেই। রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর, কাকরাইল, নয়াপল্টন, আরামবাগ, মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, পুরানা পল্টন, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট, মৎস্যভবন, সেগুনবাগিচার বিভিন্ন এলাকার সড়কেও একই অবস্থা।
সায়েদাবাদ-গাবতলী রুটে চলাচলকারী একটি গণপরিবহনের সহকারী সুমন বাংলানিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকেই রাজধানীতে বাসের যাত্রী কমতে শুরু করেছে। আগে সায়েদাবাদ থেকে মতিঝিল পর্যন্ত আসতে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা লাগলেও রাস্তা ফাঁকা থাকায় আজ ১০ মিনিটেরও কম সময়ে মতিঝিল এসে গেছি।
আজমেরী বাস সার্ভিসের চালক রাজ্জাক বলেন, আজ রাস্তা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক ফাঁকা। ঢাকার ভেতরের যাত্রী নেই বললেই চলে। বাস, ট্রেন আর লঞ্চ টার্মিনালমুখী যাত্রীর সংখ্যাই বেশি।
দৈনিক বাংলা মোড়ে অন্যদিন যানজটে আটকে থাকা লাগলেও শনিবার সকালে একদমই ফাঁকা দেখা গেলো। চারদিকের রাস্তায় কোনো জট নেই। নেই গণপরিবহন কিংবা প্রাইভেট কারের হর্নের শব্দও। পথচারী আর রিকশার সংখ্যাই বেশি। ফুটপাতের দোকানেও তেমন ভিড় দেখা গেলো না। দোকানিরা সবেমাত্র দোকান খুলেছেন।
তবে বেশিরভাগ মানুষ ঢাকা ছাড়ার কারণে এই দুদিন বেচা-কেনা তেমন হবে না বলেই জানিয়েছেন অনেকে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিদিন বেশ কয়েকটি সংগঠনের মানববন্ধন হলেও শনিবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন।
এদিন প্রেসক্লাবের সামনের সড়কটি পুরোটাই ফাঁকা দেখা গেলো। সচিবালয়ের গেটেও তেমন কোনো মানুষের দেখা মিললো না। একটু সামনে এগিয়ে হাইকোর্টের সামনে জাতীয় ঈদগাহে চলছে ঈদের নামাজের প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে প্যান্ডেল নির্মাণ শেষ হয়েছে। মাইকে চলছে ওয়াজ-মাহফিল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এখানেই হবে ঈদের প্রধান জামাত।
কাকরাইল থেকে নাইটিংগেল মোড়-ফকিরাপুল মোড়, আরামবাগ, নটরডেম কলেজ হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত পৌঁছাতে অন্যদিন ঘাম ঝড়াতে হয়। শনিবার সকালে এই পথটুকু যেতে তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি।
পুরো রাস্তায় কয়েকটি রিকশা ছাড়া আর কোনো যানবাহন চোখে পড়েনি। ফকিরাপুলের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বেলা বাড়লে কিছু মানুষ ও যানবাহন বেড় হবে। তবে যেহেতু ঈদের ছুটি তাই অনেকটা ফাঁকাই থাকবে এই এলাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৯
এমএইচ/এমএ