সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি, ভেটখালী, তারানিপুর, সাপখালী, ধুমঘাট, মুন্সিগঞ্জ, কাশিপুর, কচুখালী এলাকায় বসবাস করে আদিবাসী মুণ্ডারা। সাতক্ষীরা উপকূলে মুণ্ডা জনগোষ্ঠী রয়েছে আড়াই সহস্রাধিক।
শ্যামনগরে মুণ্ডাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐহিত্য ধরে রাখতে কাজ করছে ক্যারামমুরা নাট্য গোষ্ঠী নামের একটি সংগঠন।
এই নাট্য গোষ্ঠীর পরিচালক গোপাল চন্দ্র মুণ্ডা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখানে যুগ যুগ ধরে থাকলেও সুন্দরবনে আসার আগে আমাদের অবস্থান কোথায় ছিল, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না আমাদের। ২০১৭ সালে উৎসের সন্ধানে বেরিয়ে জানা যায় প্রকৃত ইতিহাস। রাচি ছিল আমাদের আদি নিবাস। আমরা ভারতের রাচিতে গিয়ে এর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। একই সঙ্গে পূর্বপুরুষদের সম্পর্কেও জানতে পারি।
তিনি জানান, ‘মুণ্ডারী’ ধর্মের অনুসারী মুণ্ডাদের প্রধান উৎসব ‘করম পূজা’। বাংলা ভাদ্র মাসের একাদশী তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়। আর মুণ্ডাদের নিজস্ব ভাষা ‘সাদরী’ এবং সংস্কৃতির প্রধান ধারক ও বাহক ‘বন্দনা নৃত্য’। সুন্দরবন এলাকার মুণ্ডাদের জীবন-জীবিকা বনের উপরই নির্ভরশীল।
সাংস্কৃতিক ঐহিত্য ধরে রাখার পাশাপাশি মুণ্ডাদের উদ্যোগে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের কালিঞ্চি গ্রামে গড়ে উঠেছে কালিঞ্চি ক্যারামমুরা ম্যানগ্রোভ ভিলেজ (পর্যটন কেন্দ্র)। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের থাকা, খাওয়া ও সুন্দরবন ভ্রমণের সুব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে আদিবাসী মুণ্ডাদের নানান সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড দেখার সুযোগও।
তবে, তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এখানে ছোট্ট একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলেও রাস্তা-ঘাটের দুরবস্থা পর্যটন সম্ভাবনা বিকাশের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন বাইরে থেকে পর্যটকরা এখানে আসার জন্য যোগাযোগ করেন, তখন রাস্তা-ঘাটের দুরবস্থার কথা শুনে অনেকে পিছিয়ে যান। যা আদিবাসী মুণ্ডাদের সংস্কৃতির বিকাশকেও বাধাগ্রস্ত করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
আরএ