সম্প্রতি ওই সড়কের প্রায় ১০ ফুট জায়গার কার্পেটিং উঠিয়ে প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, করটিয়া-জশিহাটী ভায়া দেউলী সড়কটিতে দীর্ঘদিন যাবৎ কার্পেটিং উঠে বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিলো এ সড়কে যাতায়াতরত সাধারণ মানুষের। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর মেরামতের জন্য ২৮শ’ মিটার কাজ আসে এ সড়কের।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লি অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-২ (আইআরআইডিপি-২) এর আওতায় এলজিইডির মাধ্যমে প্রকল্পটির কাজ পায় টাঙ্গাইলের মেসার্স হিরো এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হলে স্থানীয়দের নজরে অনিয়মের বিষয়টি ধরা পরে। পরে দাপনাজোর এলাকায় গত ৩১ আগস্ট বিকেলে প্রায় ১০ ফুট জায়গায় কার্পেটিং উঠিয়ে প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সড়কটি পরিদর্শন করেন।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় লিকসন হাসান, শরিফুল ইসলাম, সোহেল, আব্দুল মান্নান, পলাশসহ বেশ কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, দীর্ঘদিন পর সড়কটি মেরামত করা হয়েছে। তবে সড়কটিতে নিম্নমানের ইট, খোয়া ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া ধুলাবালি মিশ্রিত পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। সড়কটি পরিস্কার না করেই কার্পেটিং করা হচ্ছে। ফলে কাজটি চলমান থাকা অবস্থাতেই সড়কের বিভিন্ন জায়গায় কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে তারা বেশ কিছু জায়গার কার্পেটিং উঠিয়ে প্রতিবাদ জানান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও দীর্ঘ দিনের প্রতিক্ষার ফল সড়কটির কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে তদারকি করার অনুরোধ জানান এলাকাবাসী।
মেসার্স হিরো এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী মো. হিরো বাংলানিউজকে জানান, বৃষ্টি থাকায় সড়কের অল্প কিছু জায়গায় কাজের ফিনিশিং দিতে পারিনি। এরপরই মেশিন নষ্ট হয়ে যায়। পরে ওই জায়গায় এলাকাবাসী কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলেন। সড়কটি উপজেলা প্রকৌশলী রোজদিদ আহম্মেদ পরিদর্শন করে সঠিকভাবে মেরামত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
উপজেলা প্রকৌশলী রোজদিদ আহম্মেদ জানান, এক কোটি এক লাখ টাকা ব্যয়ে করটিয়া-জশিহাটী ভায়া দেউলী সড়কের ২৮শ’ মিটার পর্যন্ত কাজ চলছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৭শ’ মিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে দাপনাজোর এলাকায় এলাকাবাসী কাজের অনিয়মের অভিযোগ এনে ৫ থেকে ৭ ফুট জায়গার কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলেছেন। পরে খবর পেয়ে সড়কটি পরিদর্শন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে। সিক্স মিলি পাথর পরিবর্তন করে নতুন করে পাথর এনে কাজ করার জন্য। এছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহার স্বপ্না বাংলানিউজকে বলেন, এলাকাবাসী সড়কে কার্পেটিং উঠানোর খবর পেয়ে আমি সড়কটি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে কাজটি বন্ধ রয়েছে। নতুন করে উপকরণ এনে কাজ শুরু করার জন্য বলা হয়েছে। কাজ শুরু হলে এলজিইডি প্রকৌশলী সার্বক্ষণিক তদারকি করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৯
ওএইচ/