ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জাবি ভিসিকে পদত্যাগে আন্দোলনকারীদের আলটিমেটাম

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
জাবি ভিসিকে পদত্যাগে আন্দোলনকারীদের আলটিমেটাম

ঢাকা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের আলোচনা ফলপসূ হয়নি। সেজন্য ১ অক্টোবরের মধ্যে উপাচার্যকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পদত্যাগ না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি না ঘটানোর কথাও জানান আন্দোলনকারীরা।

মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে চার ঘণ্টাব্যাপী দীর্ঘ আলোচনা হয়। এতে কোনো ফল না পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ আলোচনা শেষ না করেই নতুন কলা ভবনের কাউন্সিল কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা।

অসমাপ্ত বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’র মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন জানান, ‘টেন্ডার ছিনতাইয়ের বিচার না করা, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, কমিশন কেলেংকারি, চাঁদা দাবির বিষয়টি পাঁচ মাস গোপন রাখা, টাকা ভাগ বাটোয়ারার ঘটনায় জড়িতদের সরাসরি স্বীকারোক্তি- এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মনে করি উপাচার্য ফারজানা ইসলামের পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। আমরা তাকে পদত্যাগ করার জন্য আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। ’ 

এসময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন অধ্যাপক রায়হান রাইন। তিনি জানান, দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত ও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল হবে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনে অবাঞ্ছিত ও সর্বাত্মকভাবে প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন তিনি। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ না করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত এই প্রত্যাখ্যান ঘোষণা কার্যকর থাকবে বলেও জানান অধ্যাপক রায়হান রাইন।

আলোচনা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা আমাকে বলছেন, আমার কথার কোনো সামাঞ্জস্য নাই। শোভন-রাব্বানীর (ছাত্রলীগের বাদ হওয়া কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) ক্যাম্পাসে আসার কথা আমি গোপন রেখেছি। এজন্য আমি নৈতিক অবস্থান হারিয়েছি। তাই আমার পদে থাকার কোনো সুযোগ নেই। ’

‘আন্দোলনকারীরা আমার পদত্যাগ দাবি করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডার তো শুধু তারাই নন। যদি সবাই মনে করেন আমি নৈতিক অবস্থান হারিয়েছি, তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। উপাচার্য হিসেবে আমার নিজেকে পরিচ্ছন্ন করার সুযোগ আছে। সেটা আমি ইউজিসিকে বলবো যেন তারা একটা তদন্ত করেন। তদন্ত চলাকালীন সময়ে আমাকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে কি-না, তা আমি বলতে পারি না। সেটা বলবেন আচার্য (রাষ্ট্রপতি)। ’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমি চাইলেই তো আর পদত্যাগ করতে পারি না। তাদের পদত্যাগের দাবিতেও যদি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে এখানে থাকার নির্দেশ দেন তাহলে আমাকে গালমন্দ খেয়েও থাকতে হবে। ’

এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আলোচনা শুরু হয়। এতে প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), কোষাধ্যক্ষসহ সাতজন এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে আটজন শিক্ষকসহ ২২ জন অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।