প্রকল্পটি নিয়ে ০৫ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মিজ শামীমা নার্গিসের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বিশেষ প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (এসপিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় সরকারি তহবিল থেকে আসবে ৬৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ঋণ দেবে ১১৩ কোটি টাকা।
প্রকল্পের আওতায় অস্বাভাবিক পরামর্শক ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। একই সঙ্গে প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক ব্যয় কমানোর সুপারিশ করা হয়েছে। টেকনিক্যাল এসিস্ট্যান্স ফর রোড ট্রান্সপোর্ট কানেক্টিভিটি ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরি ফ্যাসিলিটি-২’ প্রকল্পের আওতায় এই বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। পরামর্শক খাতে ব্যয় কমানোর জন্য একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছে ভৌত অবকাঠামো বিভাগ। পরে কমিটি রিভিউ করে পরামর্শক খাত থেকে ব্যয় কমানো হবে। প্রয়োজনে প্রকল্পের আরো সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের উপ-প্রধান (সড়ক পরিবহন উইং) এ.এইচ.এম কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে আমরা একটা সভা করেছি। টেকনিক্যাল এসিস্ট্যান্স মানেই পরামর্শক নিয়ে কাজ করতে হয়। তারপরও প্রকল্পের আওতায় অস্বাভাবিকভাবে পরামর্শক খাতে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এ খাতে ব্যয় কমিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। ’
সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি ও ডিটেইল্ড ডিজাইনের জন্য পরামর্শক খাতে মোট ১৫৯ কোটি ৫৩ লাখ ৫৬ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই টাকা ব্যয় হবে বৈদেশিক পরামর্শক ২০২ জনমাস (২০২ জনের এক মাস লাগবে), স্থানীয় পরামর্শক ১৮শ’ জনমাস, স্বতন্ত্র পরামর্শক ১০০ জনমাস ও প্রকল্প প্রস্তুতি সাপোর্টিং স্টাফ ২১ জনমাস। এসব পরামর্শকের বিষয়ে নানা ধরণের নেতিবাচক আলোচনা হয় এসপিইসি সভায়। প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক পরামর্শকের সংখ্যা, জনমান, সম্মানি, ভাতাদি এবং স্থানীয় পরামর্শকের সংখ্যা কমানোর তাগিদ দেওয়া হয় সংশ্লিষ্টদের।
শুধু পরামর্শক নয়, এছাড়া জনবলের বেতন খাতে আবারও ৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং আউটসোর্সিং খাতে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাতে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১৭৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকার মধ্যে পরামর্শক, বেতন, আউটসোর্সিং ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ খাত মিলিয়ে মোট ১৬৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয় হবে। ফলে প্রকল্পের অধিকাংশ অর্থই এসব খাতে যাচ্ছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ‘বর্তমানে দেশের স্থলবন্দরসমূহের সঙ্গে কানেকটিং সড়কসমূহের উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৯টি স্থল বন্দরের সড়কসমূহের ফিজিবিলিটি ও নকশা করা হবে। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, সাতক্ষীরার ভোমরা, কুড়িগ্রামের সোনাহাট, দিনাজপুরের হিলি ও বিরল, ময়মনসিংহের গুবরাকুড়া, কুমিল্লার বিবিরবাজার, ফেনীর বিলুনিয়া, হবিগঞ্জের বাল্লা ও খুলনার মংলা সমুদ্র বন্দরের সংযোগ সড়ক ঢাকার পানগাঁও, বুগুড়ার খানপুর ও গাজীপুরের ধীরাশ্রম সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে এ প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪১০ কিলোমিটার সড়কের ফিজিবিলিটি স্টাডি ও ডিটেইল্ড ডিজাইন সম্পন্ন করা হবে। চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। শুধু নকশা ও ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করতেই এই অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্রস্তাব।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্মপ্রধান মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রকল্পের আওতায় ৯টি স্থল বন্দরের সড়কসমূহের ফিজিবিলিটি ও নকশাসহ অন্যান্য কাজ করা হবে। পরামর্শক ব্যয় কমানোর বিষয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিভিউ করে ব্যয় কমাবে। আমি এই কমিটির মধ্যে নাই।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
এমআইএস/এমকেআর