তারা জানান, গাজীপুর সিটি মেয়র মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। কিন্তু, কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় তার দুর্নাম হচ্ছে।
এলাকাবাসী বলছেন, বেশি লাভের আশায় নির্মাণ খরচ কমাতে নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহার করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর এ কাজে জড়িত জিসিসির কয়েকজন প্রকৌশলী। তাছাড়া, ইটের খোয়ার পরিমাণ কমিয়ে মাত্রাতিরিক্ত বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। এ নিয়ে কয়েকবার অভিযোগ করলেও কর্ণপাত করছেন না তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঘিয়া থেকে বাঘিয়া মুন্সিবাড়ি নদীর পাড় পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কটিতে উন্নয়ন কাজের অংশ হিসেবে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। সড়কের বিভিন্ন অংশে ইট, বালু ও ইটের খোয়া ফেলা হচ্ছে। এর মধ্যে মুন্সিবাড়ি এলাকায় আমির হোসেনের বাড়ির সামনে নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে সড়কের স্থায়ীত্ব নিয়ে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে কয়েকবার নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহারে বাধা দিয়েছিলেন তারা। সেসময় এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে এসব ব্যবহার বন্ধ রাখে ঠিকাদারের লোকজন। কিন্তু, কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার একই কাজ শুরু করেছেন তারা। স্থানীয় বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মালেক সরকার বাংলানিউজকে বলেন, আগে নিম্নমানের ইট ও খোয়া সড়কে দিচ্ছিল ঠিকাদার। তখন আমরা সেসব ব্যবহার করতে দেইনি। পরে বাধ্য হয়ে সেগুলো সরিয়ে নেয় তারা। এখন আবার নিম্নমানের ইট-খোয়া সড়কে ফেলা হচ্ছে। এসব যেন আর ব্যবহার করা না হয় সেজন্য তিনি কাউন্সিলরের কাছে দাবি জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সড়কটির সংস্কার কাজের অনুমোদন পেয়েছে দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। কাজের তত্ত্বাবধায়ন করছেন সিটি করপোরেশনের সাত নম্বর জোনের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী তারেক হাসান।
সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে তারেক হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ওই সড়কে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। সবসময় কাজ পরিদর্শন করা হচ্ছে।
এসময় ঠিকাদারের সুপারভাইজার রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে এ প্রকৌশলীকে মোবাইল ফোনে কথা বলিয়ে দেওয়া হয়। তখন, রাকিবুলও নিম্নমানের ইট-খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান।
এদিকে, সড়ক নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবেদন হচ্ছে জানতে পেরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেন স্থানীয় কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ। তিনি প্রতিবেদকের সঙ্গে উচ্চকণ্ঠে কথা বলেন ও দাবি করেন, সড়কের কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না, এ অভিযোগ মিথ্যা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কথা স্বীকার করলেও বিষয়টি অস্বীকার করেন এ কাউন্সিলর।
এছাড়া, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রজেক্ট ম্যানেজার আব্দুল মাতিন খানও সড়কে নিম্নমানের ইট-খোয়া দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, রাস্তা কাটার সময় কিছু ইট বের হয়েছিল, সেগুলোই সম্ভবত সড়কে পড়েছিল। কিছু ইট নিম্নমানের ছিল বলে সেগুলো ফেরত দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাত নম্বর জোনের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এখানে দুই নম্বরি করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবসময় সড়কের দেখাশোনা করছি। এর মধ্যে যদি কেউ অনিয়ম করে, আমি কী করতে পারি? এর আগে দুই নম্বর কিছু ইট ছিল, আমরা সেগুলো সরিয়ে দিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
আরএস/একে