গত ১৭ সেপ্টেম্বর জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তাকে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নাজমা নাহার ওই প্রজ্ঞাপনে সই করেন।
সূত্র জানায়, গত ১২ মার্চ নীলফামারী জেলা পরিষদে সচিব হিসেবে যোগদান করেন ড. মো. সাইফুল আলম। এখানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় অতিরিক্ত হিসেবে এই দায়িত্বও পালন করছিলেন তিনি। মাত্র সাত মাসের দায়িত্ব পালনকালেই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
জেলা পরিষদের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান দেওয়ান বিপ্লব আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জেলার ছয় উপজেলার ডাকবাংলোগুলোতে কেয়ারটেকার থাকলেও অপ্রয়োজনে দৈনিক হাজিরাভিত্তিতে লোক নিয়োগ, পিটিআই সংলগ্ন দীর্ঘদিনের পুরনো পুকুর মাটি দিয়ে ভরাট, আদালতে মামলা থাকা সত্ত্বেও লোক নিয়োগ, দরপত্র ছাড়াই কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরা, আসবাবপত্র সংগ্রহ, অফিস মেরামত, সরকারি গাড়ির অপব্যবহারসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া জেলা পরিষদের লাইব্রেরির জন্য একজনকে হুট করে নিয়োগ দিয়েছে। এজন্য কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি।
আরেক সূত্র জানায়, বিভিন্ন ব্যাংকে নীলফামারী জেলা পরিষদের প্রায় ৭০ কোটি টাকা ডিপোজিট রয়েছে। ওই টাকার লভ্যাংশ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে ভুয়া কাগজপত্রে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা অনিয়ম করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট অভিযুক্ত সচিব সাইফুল আলমের বদলির আদেশ হয়েছিল। বদলি আদেশের পর সেটি ঠেকাতে তৎপরতা শুরু করেন তিনি।
বদলি আদেশের পরও গত ৪ সেপ্টেম্বর তার সইয়ে উচ্চমান সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
২৮ আগস্ট জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়েছিল ড. সাইফুল আলমকে। এতে সই করেছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ। পরবর্তীতে ১৭ সেপ্টেম্বর ওই বদলির আদেশকে পরিবর্তন করে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে সাইফুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তার বদলি হওয়ার সত্যতা বাংলানিউজের কাছে স্বীকার করেন। তবে তার বিরুদ্ধে আনিত অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তার ভাষ্য, জেলা পরিষদের বেশ কিছু সদস্য তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সুষ্ঠুভাবে তদন্তের দাবি তুললে জনপ্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি টিম তদন্তে আসে। তবে তদন্ত ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য একজন প্রভাবশালী নেতা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৯
এসএ/