শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের কাছে আশরাফুল হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দুই আসামি।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত ) হানিফ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, গত ৬ আগস্ট বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় আশরাফুল।
পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল নিখোঁজের ঘটনায় তার সহপাঠীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নেন। এক পর্যায়ে ২৫ আগস্ট সিংগাইর আজিজমপুর এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় আশরাফুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
পরে সেই মোবাইলের সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে সদর উপজেলার কাফাটিয়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন (২৪) ও সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা গ্রামের আরিফ হোসেনকে (২৩) গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তারা আশরাফুলকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। এরপর গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) তাদের দেওয়া তথ্য মোতাবেক আশরাফুলের মরদেহ উদ্ধারের জন্য উত্তর জামশা এলাকার কালিগঙ্গা নদীতে ডুবুরি দিয়ে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গ্রেফতার দুই ব্যক্তি পুলিশ ও আদালতকে জানান, ঘটনার দিন আসামী ইব্রাহিম আশরাফুলকে নিয়ে সিংগাইর উপজেলার উত্তর জামশা গ্রামে যান। পরে গ্রামের বাসিন্দা আলমের বাড়িতে চার আসামিসহ মাদক সেবন করে আশরাফুল। এক পর্যায়ে রাত নেমে এলে আশরাফুলকে বাঁশঝাড়ে নিয়ে গলায় গামছা পেচিয়ে হত্যা করে লাশ কালিগঙ্গা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। রাতেই আশরাফুলের মোবাইল থেকে ‘ইমো’ অ্যাপ ব্যবহার করে আসামিরা তার প্রবাসী বাবা মোহাম্মদ আলীর ছেলে অপহরণের কথা বলে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
পুলিশ জানায়, ওই ঘটনার কয়েকদিন পর আসামিরা ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে রাজবাড়ির সাজ্জাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির কাছে আশরাফুলের সুজুকি ব্রান্ডের মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়। শুক্রবার মোটরসাইকেলটি সিলেট থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ আরও জানায়, এরই মাঝে আশরাফুল হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার আসামির একজন বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বাকী আরও একজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৩ ঘণ্টা, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
এসআরআর/এইচজে