আক্রান্তদের মধ্যে নারী ভুক্তভোগীদের সংখ্যা বেড়েছে ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। তবে ভুক্তভোগীদের ৮০ দশমিক ৬ শতাংশই আইনের আশ্রয় নেন না।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে এসব তথ্য জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিসিএ ফাউন্ডেশন)। সাইবার সচেতনতা মাস (ক্যাম) অক্টোবর ২০১৯-এর আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আয়োজক ছিল নবগঠিত থিংক-ট্যাংক ফর সিকিউর ডিজিটাল বাংলাদেশ। এতে সভাপতিত্ব করেন সিসিএ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মুস্তাফিজ। গবেষণা প্রতিবেদনে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তায় অংশীজনদের প্রতি ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, থিংক ট্যাংক ফর সিকিউর ডিজিটাল বাংলাদেশের আহ্বায়ক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন, প্রযুক্তিবিদদের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইসাকা ঢাকা চ্যাপ্টারের ডিরেক্টর (মার্কেটিং) মাহবুব উল আলম, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি মাহমুদা আফরোজ লাকী ও সাহিত্য সাংবাদিক শাহরোজা নাহরিন। সঞ্চালক ছিলেন সিসিএ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুন আশরাফী।
মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘আইন আমাদের ১০ থেকে ২০ ভাগ সুরক্ষা দিতে পারে, বাকিটা সচেতনতার মাধ্যমেই করতে হবে। সাইবার জগতে পরিবারকে বাঁচাতে হবে নিজেদেরই। আমাদের মায়েরা তার সন্তানকে স্কুলে-ভার্সিটিতে নিয়ে যায়, চোখে চোখে রাখ হয়। অথচ সেটি অকার্যকর হয়ে গেলে সন্তানের হাতে ডিভাইস তুলে দিচ্ছে, স্মার্ট ফোন দিয়ে দিচ্ছে। হয়তো একটি রুমে তাকে আবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে, কিন্তু তখন সে ইন্টারনেটের সুবিধা নিয়ে পুরো সাইবার জগতে বিচরণ করছে। ’
সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কম্পিউটার এখন আমাদের জন্য সৌখিন কোনো বস্তু নয়, নিত্য প্রয়োজনীয়। অপরাধীরা আগের মতোই অপরাধ করছে। তবে ধরন পরিবর্তন হয়েছে। ইন্টারনেটের সুন্দর সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে অপরাধীরা ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয় এবং পরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটায়। এর জন্য কোনো কারিগরি জ্ঞান দরকার হয় না। এগুলোকে বলে স্যোসাল ইঞ্জিনিয়ারিং। অপরাধীরা অর্থনৈতিক লাভের জন্য এসব করে। ’
এডিসি মাহমুদা আফরোজ লাকী বলেন, ‘দিন দিন সাইবার অপরাধ বাড়ছে। আমাদের অজান্তেই অনেক তথ্য অন্যের কাছে চলে যাচ্ছে। এজন্য এসব বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। আমরা সব সময় পরামর্শ দেই ম্যাসেঞ্জারের গোপনীয় বিষয়গুলো ডিলিট করতে। কারণ, আজকাল কারও কারও ফেসবুক হ্যাক (বেদখল) করে ম্যাসেঞ্জারের একান্ত ব্যক্তিগত গোপন তথ্য ও ছবি নিয়ে টাকা দাবি করা হচ্ছে। ’
আলোচনা সভায় জানানো হয়, সাইবার অপরাধের ফলে ভুক্তভোগীদের ৮০ শতাংশ ভুক্তভোগীই অভিযোগ করেন না। আর যারা অভিযোগ করেন তাদের মধ্যে সন্তুষ্টির হার ১৯ দশমিক ২ শতাংশ।
সম্পূর্ণ গবেষণা প্রতিবেদনটি পাওয়া যাবে ccabd.org ওয়েবসাইটে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯
এসএইচ এস/ওএফবি