শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ছায়ানট আয়োজন করে শরতের অনুষ্ঠানের। এসময় ‘ওগো শেফালি বনের মনের কামনা’ গানটির সম্মিলিত পরিবেশনায় শুরু হয় শরৎ বন্দনা।
প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে অনেক আগেই। শুক্রবার সকালে ষষ্ঠী পূজোর মধ্য দিয়ে বাঙালি সনাতন ধর্মীরাও মেতেছেন শারদোৎসবে। আর শরতের এই শেষ ভাগে আশ্বিনের সকালে রাজধানীতে সুর-গীতি-নৃত্যে শরৎকে আবারও নতুন করে উদযাপন করলো ছায়ানট।
আয়োজনে সম্মেলক পরিবেশনার পরে শিল্পী অভয়া দত্ত শোনান রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘আমার রাত পোহাল'। এরপরের পরিবেশনায় রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী শ্রাবণী মজুমদার শোনান ‘অমল ধবল পালে লেগেছে...’। সুতপা সাহা শোনান রবীন্দ্রনাথের ‘ওগো কে যায় বাঁশরি’, মোস্তাফিজুর রহমান তূর্য পরিবেশন করেন ‘আমি চঞ্চল হে’ তানিয়া মান্নান শোনান ‘এসো শরতের অমল মহিমা’। এরপর শ্রেয়া ঘোষের কণ্ঠে ‘সকরুণ বেণু বাজায়ে কে যায়’, আইরিন পারভীন অন্না ‘এই তো আমার প্রেম’, শুক্লা পাল সেতু শোনান ‘যে ছায়ারে ধরব বলে’, অসীম দত্ত পরিবেশন করেন ‘তোমার সোনার থালায়’, নাঈমা ইসলাম নাজ গেয়ে শোনান ‘হৃদয়ে ছিলে জেগে’, প্রার্থ প্রতিম রায় ‘আমি চিনি গো চিনি’ এবং সেঁজুতি বড়ুয়া নিবেদন করেন ‘কেন যে মন ভোলে’।
সম্মেলক নৃত্য পর্বেও সব ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত। ছায়ানটের খুদে ও বড় শিল্পীদের দল ‘আলোর অমল কমল খানি’, ‘শরতে আজ কোন অতিথি’, ‘আমার নয়ন ভুলানো এলে’, ‘শরত তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি’, ‘আজ ধানের ক্ষেতে’ গানের সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন। ‘তোমার যা বল তাই বল’ গানটির সঙ্গে একক নৃত্য পরিবেশন করেন সুদেষ্ণা স্বয়ংপ্রভা তাথৈ।
আয়োজন নিয়ে বাংলানিউজের কথা হয় ছায়ানট সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসার সঙ্গে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো ছয় ঋতুর দেশ তো কোথাও পাওয়া যাবে না। আমরা যে প্রকৃতির সন্তান, তা এ ঋতুচক্রের মধ্য দিয়ে বুঝতে পারি। এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঋতু চক্রের মতোই আমরা মিলেমিশে আছি। একইসঙ্গে এ উৎসবের মধ্যে দিয়ে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের চর্চা করি। গানের মধ্য দিয়ে আমরা ঋতুর মতো সবার সঙ্গে মেলবন্ধন তৈরি করি। সেই জায়গা থেকেই প্রীতি ও ভালোবাসার টানে সবার একত্রিত হওয়া। সেই বিষয়টিই সত্য বনে গেল ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস শোভার কথায়। তার বন্ধুরা এসেছিলেন শরতের সাচে, খোঁপায় ছিল হরেক রকমের ফুল।
শোভা বাংলানিউজকে বলেন, এই ঢাকা শহরে কখন কোন ঋতু আসে-যায়, তা তো সহজে বোঝা যায় না, এই আয়োজনগুলোর মধ্য দিয়েই যা একটু বুঝতে পারি। আর বাঙালি সংস্কৃতিও আয়োজনগুলোর মধ্য দিয়ে নতুন করে উপভোগ করতে পারি। তবে সবচেয়ে ভালো লাগে বন্ধুরা মিলে একত্রিত হওয়াটা।
বকুলতলায় পরিবার এবং বন্ধুদের নিয়ে আয়োজনে যোগ দিতে দেখা গেছে অনেককেই। এসময় মুড়ি-মুড়কির সঙ্গে সবাই উপভোগ করেছেন শরতের রাঙা সকালটা। অনুষ্ঠানস্থলে এসেছিলেন ছায়ানট সভাপতি সন্জীদা খাতুনও।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৯
এইচএমএস/এইচএ/