সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে জাজিরা প্রান্তের চর এলাকা থেকে '৪-ই' স্প্যানকে ভাসমান ক্রেনের মাধ্যমে ২৮ ও ২৯ নম্বর পিলারের সামনে নোঙর করে রাখা হয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেতুর ২৩ ও ২৪ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) স্প্যানটি বসানো সম্ভব হলে দৃশ্যমান হবে সেতুর ২২৫০ মিটার (২.২৫ কিলোমিটার)।
পদ্মাসেতুর প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, তিনটি ড্রেজারের মাধ্যমে ড্রেজিং চলছে। ড্রেজিং করেও স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। পলি অপসারণ করার ১-২ ঘণ্টা সময় পরে আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায়।
ধূসর রংয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন বহন করে চলাচলের জন্য নাব্যতা সংকট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে পদ্মাসেতুর আরও ৩টি স্প্যান প্রস্তুত হয়ে আছে। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে স্প্যানগুলো বসাতে দেরি হচ্ছে। সেতুর ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩ নম্বর পিলারের ওপর চারটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা আছে চলতি বছরের মধ্যে। সর্বশেষ ২৯ জুন মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১৫ ও ১৬ নম্বর পিলারের ওপর বসে চতুর্দশ স্প্যান ৩সি।
প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, সবকিছু অনুকূলে থাকলে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হবে স্প্যান বসানোর কার্যক্রম। দুই পিলারের মধ্যবর্তী সুবিধাজনক স্থানে এনে ভাসমান ক্রেনটিকে নোঙর করা হবে। এরপর পজিশনিং করে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে স্প্যানটিকে তোলা হবে পিলারের উচ্চতায়। রাখা হবে দুই পিলারের বেয়ারিং এর ওপর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানান, পদ্মাসেতুর জন্য মোট ৩০টি স্প্যান আসে মাওয়ায়। এর মধ্যে ১৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে সেতুর পিলারের ওপর। একটি স্প্যান জাজিরা প্রান্তের চর এলাকায় স্টোরেজ করে রাখা এবং আরেকটি স্প্যান ক্রেনে আছে। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ১৪টি স্প্যান আছে এর মধ্যে চারটি স্প্যান ফিটিং করে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। ৪২টি পিলারের মধ্যে এখন ১০টি পিলারের কাজ বাকি আছে। জাজিরা প্রান্তে রেলওয়ে স্ল্যাব বসেছে ৩৬১টি ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসেছে ৫৪টি। পদ্মাসেতুর ৪, ৫, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ২৪, ২৫, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১, ৪২ নম্বর পিলারে ১৪টি স্প্যান বসিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে ২১০০ মিটার।
জানা যায়, পুরো সেতুতে ২ হাজার ৯৩১টি রোডওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে। আর রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হবে ২ হাজার ৯৫৯টি। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৯
আরএ